নিজস্ব প্রতিবেদক: হাওরে খরা, বন্যা, আগাম বন্যা, পাহাড়ী ঢল, আফাল, আফার, বজ্রপাত, গরম, ঠান্ডা, শৈতপ্রবাহ, ঘুণীঝড়, কৃষি উপকরনের চড়া দাম, ফসলের মুল্যকম, পোকার আক্রমণ, বীজের সমস্যা, সেচের সমস্যা, অতিবৃষ্টিসহ নানান সংকট চলমান। জলবায়ুগত পরিবর্তনের কারণে এই সংকট আরো বড় হয়ে দেখা দিয়েছে কৃষকের কাছে।
বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এর দাতা সংস্থা অক্সফামের সহযোগিতায় “স্থানীয় অবিযোজন কৌশল বিষয়ক প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) গোবিন্দশ্রী ইনউনিয়ন ও মদন ইউনিয়নের কুলিয়াটি, উচিতপুর, পশ্চিমপাড়া, বারঘরিয়া, ভূইঁয়াহাটি, খালাসিপাড়া, গ্রামের কৃষক কৃষানি ও কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা দলের ১৫ জন কৃষক কৃষানি এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
কৃষানি মিনতী রাণীকে সভা প্রধান করে প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা সভার কাজ শুরু হয়। কৃষক কৃষানিরা হাওরের নিম্নলিখিত সমস্যার কথা তুলে ধরেন ও সমাধানে কি কি লোকায়ত পদ্ধতি ব্যবহার করেন তা বর্ণনা করেন এবং নিজ নিজ বাড়িতে কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা চর্চার পরিকল্পনা গ্রহন করেন।
অংশগ্রহণকারীরা যেসব সমস্যার তুলে ধরেন- আগাম বন্যা, ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ফসলের ক্ষতি, স্থানীয় বীজ নেই, বর্ষাকালে সবজীর জন্য বাজার নির্ভরশীল, চারণভূমি, ঘনকুয়াশায় ফসলের ক্ষতি, ঢেউয়ে বসতভীটায় ভাঙ্গন, ঠান্ডায় ফসলের ক্ষতি, ফসলের রোগবালাই বেশী, গরম ও তাপদাহে ফসলের ক্ষতি, বসতভীটায় স্থান কম, ফসলে পোকার আক্রশণ বেশী, বিষের অবাধ ব্যবহার, সেচের পানির সংকট। পরে এসব সমস্যা মোকাবেলা করার লোক প্রযুক্তির কথা বর্ননা করা এ কর্মসূচিতে।
তারা দু্টই দলে বিভক্ত হয়ে সমস্যা সমাধানে অভিযোজন কৌশল লিখেন ও উপস্থাপন করেন। তারা নিম্নলিখিত অভিযোজন কৌশল তুলে আনেন- ডোবায় পানি সংরক্ষণে রাখা এবং চৈত্র বৈশাখ মাসে সংরক্ষিত পানি থেকে সেচ প্রদান, রাসায়নিক সারের পরিবর্তে খুব অল্প পরিমানে গোবর সার ও কেঁচো কম্পোস্ট সারের ব্যবহার, ফসলের রোগবালাইয়ের জন্য জৈববালাইনাশক তৈরী করে ব্যবহার করে অল্প পরিমান কৃষক, বসতভীটা রক্ষার জন্য বাড়ীর চারপাশে ভেন্নাগাছ, উজাওরি, মুর্তাগাছ, কুচুরিপানা, হিজলকরচ রোপন করণ। নিজের বাড়িতে বীজ সংরক্ষণ করে অনেকেই (সবজীবীজ), বর্ষাকালে শাকসবজীর অভাব পূরণের জন্য বস্তাপদ্ধতি, টাওয়ার পদ্ধতি, ঘরের চাল ব্যবহার করে উৎপাদন করে ,স্থানান্তর পদ্ধতিতে চারার বীজতলা তৈরী করেন।
এ ধরণের কর্মসূচিতে প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান, সহযোগী আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শংকর ম্রং। সভাটি পরিচালনা করেন ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর আ. রব।


