দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

লোকমান আহমদ:

টানাপোড়েনের সংসারে ক্লান্ত মানুষগুলো ভেবেছিল-হয়তো এবার দম ফেলার একটু সুযোগ মিলবে। মহিলা কিংবা স্বামী-কঠোর পরিশ্রমের সংসারে সামান্য সাপোর্টই যদি আসে, তাহলে বাচ্চাদের ভবিষ্যৎটা বদলে যেতে পারে। এমনই স্বপ্ন দেখিয়েছিল ‘পাক রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (পি.আর.ডি.পি)’।

কিন্তু সেই স্বপ্নই পরিণত হলো নিখুঁতভাবে সাজানো এক প্রতারণার ফাঁদে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিষ্টি কথায় তারা মনে করিয়ে দিয়েছিল-লোন নিলে দুঃখ-কষ্ট সব দূর হয়ে যাবে। লোন পেতে শুধু ১০ শতাংশ জামানত দিতে হবে, বাকি সব দায়িত্ব তাদের। গরু পালন, ছোট ব্যবসা, বাড়ির উন্নয়ন-সব কিছুর জন্যই বিশেষ লোনের স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। সেই স্বপ্নের মোহে পড়ে কেউ গরু-ছাগল বিক্রি করেছেন, কেউ ধারদেনা করেছেন; এমনকি স্থানীয় এক ইউপি সদস্য পর্যন্ত ১০ লাখ টাকার লোন পাওয়ার আশায় ১ লাখ টাকা অগ্রিম জমা দিয়েছেন। উন্নয়ন ও স্বচ্ছলতার এই আশায় প্রায় ৮শ’ মানুষ লোনের চাহিদার ১০ শতাংশ টাকা পি.আর.ডি.পি-র হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

তারা জানতেন না-এটাই তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল হয়ে দাঁড়াবে। রোববার লোন পাওয়ার নির্ধারিত দিনে শত শত মানুষ সকাল থেকেই গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত অফিসের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। বেলা গড়ায়, রোদ মাথার ওপরে ওঠে, শিশুর কান্না আর মানুষের উৎকণ্ঠায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে-কিন্তু অফিসের তালা আর খোলে না। ফোনে কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মিনিট মিনিটে উত্তেজনা আর হতাশা বাড়তে থাকে। মুহূর্তেই পরিস্থিতি হুলুস্থুলে রূপ নেয়। তখনই সব স্পষ্ট হয়ে যায়। মানুষ বুঝে ফেলেন- তারা প্রতারকের ফাঁদে পা দিয়েছেন।

এই শোক আর ক্ষোভ নিয়ে ভুক্তভোগীরা ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী তাদের শান্ত করেন এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। অন্যদিকে গোয়াইনঘাট থানার ওসি তরিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাক রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (পি.আর.ডি.পি) এর গোয়াইনঘাট অফিসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার জুয়েল রানার ফোনে একাধিক ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, অফিসের ঠিকানা ব্যবহার করে তারা পুরো কার্যক্রম পরিচালনা করছিল-বাস্তবে সেই অফিসটিই ভাড়া নেওয়া হয়নি। বাড়ির মালিক জানিয়েছেন, আজ থেকে ভাড়া নেওয়ার কথা থাকলেও তারা কোনো টাকা পরিশোধ করেনি, এমনকি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও সম্পন্ন করা হয়নি। রোববার লোন প্রদান ও ডিড করার কথা থাকলেও তার আগেই তারা গা-ঢাকা দেয়। যে ঠিকানা তারা ব্যবহার করেছিলেন সেই ঠিকানায় কখনোই তাদের কার্যক্রম চলেনি। গ্রামের সহজ-সরল মানুষও এই অফিস আগে কখনো এসে দেখেননি।

কারণ প্রতারকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এত সুন্দরভাবে কথা বলত যে সবাই বিশ্বাস করে নিয়েছিল-এই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই একদিন তাদের বাড়িতে লোন পৌঁছে দেবে। অভাবের তাড়নায় তারা ভেবেছিলেন, যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে কোনো দৈত্য এসে তাদের দুঃখ দূর করতে চলেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই চেরাগের আলো নিভে গিয়ে এখন গোয়াইনঘাটের শত শত পরিবারের ঘরে নেমে এসেছে অন্ধকারের ছায়া।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version