নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত, প্রথিতষশা বাংলাদেশ চিন্তাবিদ ও লেখক, পাবলিক বক্তা এবং ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, “একেক বয়সে আমরা একেক পোষাক পরিধান করি। বাংলাদেশে আমরা কোর্ট-পেন্ট পরিধান করি। আমাদের গৃহিনারা এখনো শাড়ী ছাড়েননি। আমরা পায়জামা-পাঞ্জাবি ছেড়ে লুঙ্গি পড়ে এখানে আসার কথা আপনারা ভাবতে পারেন! এখন রূপান্তর হয়েছে- এটা বিপ্লব আমাদের। বিপ্লব মানে সব সময় ভালো-মন্দ, কিছু আমি বলছি না। আপনারা কেউ কেউ বলবেন একটা প্রতিবিপ্লব হয়েছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, চীনে যারা প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী আছেন- তারা অনেকেই ‘টাই’ পড়েন। তবে আগে যারা ছিলেন তারা ‘টাই’ পড়তেন না। ভারতের বড় নেতাদের মধ্যে মাহাত্মাগান্ধী অথবা জহরুল নেহরু তাঁরা ‘টাই’ পড়তেন না। পোষাকেরও একটা সংস্কৃতি আছে।”
“আমাদের দেশে নজরুল ইসলামের পরে- বয়সে নয়, গুরুত্বে যদি কোন দ্বিতীয় লেখক থাকেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে তিনি হলেন- বেগম রোকেয়া নামে যিনি পরিচিত ছিলেন। তিনি লিখতেন- মিসেস আরএস হোসেন এই নামে। কারণ তাঁর বিয়ে হয়েছিল যে ভদ্র লোকের সাথে তার নাম সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন। তাই সংক্ষেপে লিখতেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। ইংরেজিতে আরও ছোট হতো। ওই আমাদের কোর্ট-পেন্টের পরার মতো, আমাদের নামের মধ্যেও রূপান্তর আসতে থাকে। আমরা বলি না- এ.এন.এম, এ.এস.এম। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবার আ.স.ম, আ.ন.ম এগুলো চালু হয়েছিল। এখন তা পাল্টাচ্ছে। নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয় নামের মধ্যে আপনারা কিছু রূপান্তর সাধন করেছেন ৫ আগস্টের পরে। আমি জানি, আমি সেই কথা বলছি না। এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নামের আগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় লেখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব কথা লেখার দরকার কি? বিশ্ববিদ্যালয় মানে বিশ্ববিদ্যালয়ই। ‘বিশ্ব’ শব্দটা সারা দুনিয়া অর্থে নয়- বিদ্যার যে ‘বিশ্ব’, সেটার সবটুকু এখানে (বিশ্ববিদ্যালয়) আহরণ করা হয়। বেগম রোকেয়া সেই রকম স্বপ্ন দেখেছিলেন।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) বেলা পৌনে ১২টায় নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস সেন্টারে আয়োজিত ‘সুলতানার স্বপ্ন: বেগম রোকেয়া ইউটোপিয়া” শিরোনামে বক্তৃতামালায় তিনি তার বক্তেব্যে এই কথা বলেন।
এছাড়া আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. খন্দকার মোহাম্মদ আশরাফুল মুনিমের সভাপতিত্বে এবং বাংলা বিভাগের প্রভাষক ড. সাজেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম চৌধুরী।
এ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


