ইবি প্রতিনিধি:
জুলাই-অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ে উল্লাস করছে সারাদেশসহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। এ রায়ে শিক্ষার্থীরা খুশি হয়ে ক্যাম্পাসে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকাল তিনটার দিকে রায় ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে মিষ্টি বিতরণ করেন তারা। এর আগে বেলা ১১ টার দিকে ঝালচত্বরে শেখ হাসিনার রায় শুনানি প্রজেক্টরের মাধ্যমে ডিজিটাল পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা। এসময় সরাসরি রায় দেখতে ভিড় করেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, রায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতি ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাজস্বাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
শিক্ষার্থী তানভীর মন্ডল বলেন, “দীর্ঘদিনের বহুল প্রত্যাশিত খুনি হাসিনার রায় হয়েছে। জুলাইয়ের গণহত্যাসহ দীর্ঘ ১৭বছরের অন্যায়, দুর্নীতি ও নির্যাতনের স্ট্রিমরোলার চালিয়েছিল খুনি হাসিনা। আজ তার বিরদ্ধে এক ঐতিহাসিক রায় হয়েছে। এটি আপামর সারা বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশার ছিল। ১৬শ শহীদের রক্তের বিনিময় আমরা হয়তো কিছুটা স্বাদ পেতে যাচ্ছি। আজকে শুধু রায় হয়েছে কিন্তু আমাদের দাবি ইন্টারপ্রোলের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার পলাতক শেখ হাসিনাকে দেশে নিয়ে রায়ের ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানো খুনি হাসিনার বিরূদ্ধে যে রায় এসেছে আমরা এই রায়ে খুশি। তবে আমাদের দাবি থাকবে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে ভারত থেকে হাসিনা ও তার সহযোগীদেরকে দেশে এনে তাদের শাস্তি কার্যকর করে। এতে জুলাইয়ের যে আকাঙ্ক্ষা তা কিছুটা হলেও বাস্তবায়িত হবে। পাশাপাশি জুলাই শহীদসহ বাংলাদেশপন্থী যারা আত্মত্যাগ করেছে তাদের আত্মা শান্তি পাবে।”
উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তিনটি অপরাধের পৃথক অভিযোগে তাকে এই দণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া আরও দুইটি অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আর, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।


