জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩ আসামির বিরুদ্ধে আজ রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রায়কে ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীতেও। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ সড়কে গণপরিবহনের পাশাপাশি যাত্রীসংখ্যাও কম।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো প্রায় ফাঁকা, গণপরিবহন সীমিত। এমনকি রাইড শেয়ারিংও কম। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি ও অটোরিকশা চলছে।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে শাহবাগ, কাঁটাবন, মৎস্য ভবন ও বাংলামোটর এলাকায় গণপরিবহন চলাচল ছিল কম। তবে যেসব গণপরিবহন চলছে, তাদের অধিকাংশ আসনই ছিল ফাঁকা। একই চিত্র শান্তিনগর এলাকাতেও।
বিজয় সরণি, ফার্মগেট, মনিপুরিপাড়া, কারওয়ান বাজার ও ধানমন্ডি এলাকাতেও গণপরিবহন চলাচল তেমন চোখে পড়েনি। ব্যক্তিগত গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিকভাবের তুলনায় অনেক কম।
তবে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার এলাকায় গণপরিবহন চলাচল অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক ছিল। যদিও তা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা কমতে থাকে। তুলনামূলক কম ছিল যাত্রীসংখ্যাও।
শেখ হাসিনার রায় ঘিরে রাজধানীজুড়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা
সদরঘাটে যাবেন রায়হান রহমান। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে আছেন শান্তিনগরে। তিনি বলেন, অনেক সময় হলো দাঁড়িয়ে আছি। রাস্তায় বাস কম, চারদিক ফাঁকা। মূলত হাসিনার রায়কে ঘিরে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু আমার ব্যবসায়িক কাজ আছে, সে কারণে বের হতেই হলো।
গুলিস্তান থেকে সাভারগামী বাসে ওঠা এক যাত্রী বলেন, অন্যান্য দিন তো বাসে সিট পাওয়া যায় না, দাঁড়িয়ে যেতে হয়। আর আজ অর্ধেক বাস খালি।
কাঁটাবনে বাসের জন্য অপেক্ষারত মোজাহিদ হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জ যাবো ব্যবসার কাজে। কিন্তু আওয়ামী লীগের ডাকা শাটডাউননের কারণে রাস্তাঘাট ফাঁকা, গাড়িও কম। কারণ, সবার মনেই ভয় কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে!
এদিকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউন কর্মসূচিকে উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গণপরিবহন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। তবে তার বাস্তবায়ন মাঠ পর্যায়ে তেমন একটা চোখে পড়েনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাস মালিক সমিতির একজন নেতা বলেন, গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে প্রায় ২০টি পরিবহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহে একটি বাসে আগুন দিয়ে চালক জুলহাসকে হত্যা করা হয়েছে। এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে অনেক শ্রমিক বাস চালাতে চায়নি। তাছাড়া আমরাও অগ্নিসংযোগের ভয়ে আজ সড়কে বেশি বাস নামায়নি।


