নিজস্ব প্রতিবেদক: বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এই পুজার দ্বিতীয় দিন হলো মহাসপ্তমী। শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নয়, মন্ডপ ঘুরে ঘুরে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনন্দ উপভোগ করছেন অন্যান্য ধর্ম্মালম্বীরাও। সকালে নবপত্রিকা স্থাপন, কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজায় মহাসপ্তমীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল থেকেই মন্ডপ গুলোতে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীদের ভীর। আনন্দ উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি মন্ডপে মন্ডপে সন্ধ্যার বিশেষ পূজাও অনুষ্ঠিত হয়।
মহাসপ্তমীতে মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, ভক্তরা প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। পুরোহিতের সঙ্গে মন্ত্রে সুর মিলিয়ে করছেন দুর্গা মায়ের বন্দনা। কেউ কেউ এসেছেন শুধু দেবী দর্শনে। পূজা শেষে বিতরণ করা হয়েছে মহাপ্রসাদ। হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহালয়ার দিন ‘কন্যারূপে’ ধরায় আসেন দশভূজা দেবী দুর্গা। বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তাকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়। তার এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব। পঞ্জিকামতে, দেবী দুর্গা এবার গজে আগমন করবেন এবং দোলায় পৃথিবী ছেড়ে যাবেন।
পৌরশহরের আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুমন রায় পরিবারসহ এসেছিলেন উকিলপাড়া পূজা মন্ডপে। প্রার্থনা শেষে তিনি বলেন, ‘ভক্তদের দুঃখ-কষ্ট দূর করতে মা প্রতিবছর আসেন। আমাদের মধ্যে অনাবিল সুখ-সমৃদ্ধি বিলিয়ে দিয়ে বিদায় নেন। তাই মায়ের কাছে সুখ-শান্তি সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করেছি।
মহাসপ্তমীর সকাল থেকেই মন্ডপে আসা পুণ্যার্থীরা জানান, তারা দেবীর কাছে বিশ্ব শান্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন। “এবার দেবী অশুভের বার্তা নিয়ে এসেছেন। বিশ্বজুড়ে যে রক্তপাত চলছে, চারদিকে যে সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি চলছে, তা থেকে মুক্তির জন্য আমরা দেবীর কাছে প্রার্থনা করি। দেবী যেন তার অপার মহিমায় আমাদের প্রার্থনায় তুষ্ট হয়ে শান্তি ফিরিয়ে দেন। অশুভ শক্তির বিনাশ হয়ে শুভশক্তির যেন জয় হয়।
উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট মানেশ সাহা বলেন, দুর্গাপুর একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপজেলা। এখানে কোনোদিনই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়নি। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলেই মিলেই আমরা একসাথে উৎসব পালন করে থাকি। কেন্দ্রীয় বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল মহোদয়ের দিক নির্দেশনায়, বিগত বছরের ন্যায় এবারও পুজা মন্ডপ গুলোতে বিএনপি‘র নেতাকর্মীরা মিলে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা জোরদার করেছে। আশা করি সুন্দর ভাবে শারদীয় উৎসব সম্পন্ন করতে পারবো।
দুর্গাপুর থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, ইতোমধ্যে বিভিন্ন পুজা মন্ডপে পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে কিছু কিছু মন্ডপে সরাসরি সাব-ইন্সপেক্টর মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সাদাপোষাকেও রয়েছে আমাদের চৌকস বাহিনী। সবদিক মিলিয়ে দুর্গাপুরের পরিবেশ অনেক ভালো। আশা করছি শান্তিপূর্ণ ভাবে ষষ্ঠী থেকে শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত সম্পন্ন করতে পারবো।