ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সম্মিলিত বন্দরখড়িবাড়ী ও ছাতনাই বালাপাড়া দাখিল মাদ্রাসার পরিচালনা নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে এবং মাদরাসার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী। মানববন্ধনে ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, রাতারাতি গোপন কৌশলে মাদ্রাসার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি মাদরাসার জমিদাতা পরিবারের সদস্যরা পর্যন্ত বিষয়টি জানে না।
তারা বলেন, আমরা জানতে পারলাম হঠাৎ করেই আমাদের মাদ্রাসার কমিটি গঠিত হয়েছে। অথচ মাদ্রাসার জমিদাতা দাতাদের পরিবার, এলাকার শিক্ষানুরাগী মানুষ কিংবা সাধারণ অভিভাবক কেউই জানতেন না। জানা যায়, নতুন কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে বালাপাড়া ইউনিয়নের সাবেক বিএনপি সভাপতি মো. হামিদুল ইসলামকে। এলাকাবাসীর দাবি, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে এ কমিটি পক্ষপাতমূলকভাবে গঠন করা হয়েছে।
একজন বিক্ষোভকারী বলেন, মাদ্রাসার পরিচালনার জন্য নিরপেক্ষ ও যোগ্য মানুষ প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলের সাবেক সভাপতি দিয়ে মাদ্রাসার মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালানো যাবে না। এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার আব্দুল মুনাইম জানান, বিষয়টি নিয়ে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল এবং তা মীমাংসা হয়ে গেছে। তবে বিক্ষোভকারী তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে জানান, কোনো মীমাংসা হয়নি। সুপার সাহেবের কথা সত্য নয়।
এখনো বিক্ষোভ চলছে, এবং আমরা এই কমিটি মানছি না। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের দাবি দ্রুত বর্তমান কমিটি বাতিল করে নতুন করে স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ায় পরিচালনা কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, মাদ্রাসার জমিদাতা পরিবারের প্রতিনিধি শিক্ষানুরাগী মানুষ এবং স্থানীয় অভিভাবকদের মতামত নিয়েই এই নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। এলাকাবাসীরা আরও বলেন, শুধু কমিটি নয়, মাদ্রাসার সম্পত্তি নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন, মাদরাসার নামে ১২ থেকে ১৩ বিঘা জমি রয়েছে, এসব জমি বিভিন্ন মানুষের কাছে বন্ধক দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু সেই জমি থেকে আয়-ব্যয়ের কোনো সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, মাদ্রাসার জমি থেকে আয় হয় লাখ লাখ টাকা। কিন্তু সেই টাকার কোনো হিসাব নেই। এলাকাবাসীরা আরও দাবি করে বলেন, মাদরাসা পরিচালনায় সবসময় স্বচ্ছতা থাকা উচিত। অথচ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে রাজনৈতিক নেতাকে সভাপতি করার ফলে মাদ্রাসার ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তারা বলেন, আমরা চাই এই মাদ্রাসার যেন রাজনীতির কবলে না পড়ে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যেন খেলাধুলা না চলে।