নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের রাজাবাড়ী গ্রামে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির কারণে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন-স্থানীয় কৃষকরা।
অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী চাঁন মিয়া ও মজিদ মিয়া গ্রামের প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশনের মুখ বন্ধ করে ব্যক্তিগত ফিসারি তৈরি করেছেন। এর ফলে অন্তত ৫০ একর আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গিয়ে ধানচাষ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী মো. মিরাজ আলী গং-এর গণ স্বাক্ষরিত অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা পানি নিষ্কাশনের মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় শুধু আবাদি জমিই নয়, বহু বাড়িঘরের উঠানেও পানি ঢুকে পড়েছে। এতে এলাকার আমন ধানের বীজতলা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে চাঁন মিয়া ও মজিদ মিয়ার সঙ্গে কথা বললেও তারা কোনো সাড়া দেননি। বরং নিজেদের ফিসারির কাজ অবাধে চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে গারো, হাজং ও বাঙালি মিলিয়ে অন্তত ৫০টি কৃষক পরিবার মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, অভিযুক্ত চাঁন মিয়া সরকারি খাঁস জমিরও প্রায় ৯ কাঠা (৭২ শতক) দখল করে নিয়েছেন। তারা দ্রুত সরকারি জমি উদ্ধার ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
এর মধ্যে ঘটনাস্থলে ভুক্তভোগী কৃষকেরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারা স্লোগান দেন- আমরা কৃষক বাঁচতে চাই, বিচার চাই, চাঁন মিয়া গংদের বিচার চাই। দাবি মোদের একটাই – পূর্বের ন্যায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা চাই।
অভিযোগকারী মিরাজ আলী বলেন, আমাদের সব ধানির জমি পানির নিচে। এখন যদি দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না হয়, এ মৌসুমের ফসল আমরা হারাবো।
অভিযুক্ত চাঁন মিয়ার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা দুই বছর হবে রেকর্ডকৃত ভূমিতে ফিসারি করেছি। পুকুরের পূর্ব পাশে জমির পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা আমরা রেখেছি। পানি বের হচ্ছে।
এ বিষয়ে রংছাতি ইউপির চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান পাঠান বাবুল বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। মানবিক দিক বিবেচনা করে পানি নিষ্কাশনের মুখের বাঁধটি দ্রুত অপসারণ করতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলেন, এখনই যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে এই মৌসুমে তাদের সব শ্রম ও বিনিয়োগ বিফল হবে। তারা প্রশাসনের কাছে জরুরি পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, ইউপি বরাবর একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে আমরা শুনেছি। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। আমরাও খোঁজখবর রাখছি।