ইবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস) লোক প্রশাসন বিভাগকে স্বতন্ত্র শিক্ষা ক্যাডারে ও এনটিআরসিএ’র সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মানববন্ধন করেছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন ভবনের সামনে এই কর্মসূচি । পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
এসময় তারা ‘মেধার সঠিক মূল্য চাই, শিক্ষা ক্যাডারে সুযোগ চাই’, ‘শিক্ষা-দীক্ষা-যোগ্যতায়, লোক প্রশাসনের বিকল্প নাই’, ‘সুশাসনের সরকার, লোক প্রশাসনের দরকারসহ বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা দুই দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- লোক প্রশাসন বিভাগকে স্বতন্ত্র কোড প্রদান করে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা; বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)-এর মাধ্যমে কলেজ পর্যায়ে ‘পৌরনীতি ও সুশাসন’ বিষয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্গত বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্তিকরণ।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, “লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা, শুধু মুখস্ত বিদ্যা নয়, বরং সুশাসন, আমলাতন্ত্র, মানব উন্নয়ন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, অর্থনীতি এবং প্রশাসনের বিভিন্ন দিকসহ সমগ্র প্রশাসনিক বিষয়াবলি অধ্যয়ন করছি। অথচ আমাদের শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। যেখানে অন্যান্য অনেক বিষয় শিক্ষা ক্যাডারের অংশ, সেখানে লোকপ্রশাসনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক বিষয় বাদ দেওয়া কেন?”
তারা আরও বলেন, “লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থীরা দেশের উচ্চ পর্যায়ে প্রশাসনে কাজ করছে, তাদের দক্ষতা প্রমাণ করছে, তবুও শিক্ষা ক্যাডারে সুযোগ পাচ্ছে না। আমরা দাবি করছি-শিক্ষা ক্যাডারে আমাদের জন্য একটি স্বতন্ত্র শাখা রাখা হোক। লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থীরা এনটিআরসিএতে অন্তর্ভুক্ত হোক। আমাদের শিক্ষার প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করা হোক।”
মানববন্ধনে বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যত বিভাগ আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত বিভাগ হলো লোকপ্রশাসন। দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিভাগ আছে এবং প্রতিবছর ২০০০-এরও বেশি শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করছে। কিন্তু তারা তাদের যোগ্য কর্মক্ষেত্রে সুযোগ পাচ্ছে না। শিক্ষা ক্যাডারসহ মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকতার সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত। একদিকে ছয়-সাত বছর সময় দিয়ে লোকপ্রশাসন পড়াশোনা করতে হয়, অন্যদিকে কয়েক মাসের ট্রেনিং দিয়েই অন্য বিভাগ থেকে প্রশাসনে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাহলে লোকপ্রশাসনে দীর্ঘ সময় ও রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়ের যৌক্তিকতা কোথায়? আমাদের যৌক্তিক দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে-এই প্রত্যাশা রাখছি।”