ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সহ-সমন্বয়কের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী বুরহান মিয়া।
শনিবার (২৬ জুলাই) ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সহ-সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ২৩ জুলাই রাত ৮টা ৩ মিনিটে ০১৭৫১-৪৩৫৮১৮ নম্বর থেকে এক মিনিটের একটি ভয়েস কলের মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। কলদাতা পরিচয় গোপন রেখে বলেন “তুমি ক্যাম্পাস থেকে সরাসরি পাশ করে বের হতে পারবা না। তুমি কোথায় থাকো, কার সাথে থাকো (তোমার ভাবী ও দেড় বছরের ভাতিজা)—সব আমি জানি। সাবধানে থাকো, কখন কী হয় বলা যায় না।’
অভিযোগে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তি মিথ্যাভাবে শিক্ষার্থী বুরহানকে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ‘ছাত্রলীগ’-এর সাথে সম্পৃক্ত বলেও অপপ্রচার করেন, যা তার ব্যক্তিগত সম্মান ও নিরাপত্তার প্রতি সরাসরি আঘাত। ব্যক্তিগত অনুসন্ধানের মাধ্যমে হুমকিদাতার পরিচয় জানতে পেরেছেন বলেও দাবি করেন বুরহান। হুমকির পর অভিযুক্ত ব্যক্তি তার বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর মাধ্যমে তার সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করেন, যা তার জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে। ঘটনার প্রমাণ হিসেবে হুমকি প্রদানের স্ক্রিনশট সংযুক্তি আকারে জমা দিয়েছেন বুরহান মিয়া।
ভুক্তভোগী বুরহান মিয়া বলেন, ‘হুমকি কি কারণে হতে পারে তা আমি গত দুইদিন অনেক ভেবেছি। আমাকে যে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ বলতেছে, এটাও এতদিন পর কেন? আমি কিছুই খুঁজে পাইনি। তবে আমার যতটুকু ধারণা, গত দুইদিন সাজিদ হত্যার মামলার রায় যেন সুষ্ঠু ভাবে আসে, এই ব্যাপারে আমি সবার সাথে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আন্দোলনে ছিলাম। আমি জানিনা তারা কি আন্দোলনটা দমানোর জন্যই আমাকে এরকম হুমকি দিলো কিনা। আর এছাড়া আমি কোনো কারণও খুঁজে পাচ্ছিনা। আমার সাথে উনার কোনো পরিচয় নাই। উনি আমাকে কেন কল দিবেন। আমি দুইদিন উনার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি যেন বিষয়টা মিটমাট হয় বা আমাকে এনসিওর করুক যে উনি হয়তো ভুল কোনো ইনফরমেশনে আমাকে এসব বলেছেন। কিন্তু আমি দুইদিনেও উনার থেকে এরকম কিছু পাইনি।’
তিনি আরোও বলেন, ‘আমি জানতে চাই, উনি কিভাবে আমাকে টার্গেট করলো? কেন আমাকে এই মিথ্যা অপবাদ টা দিলো? আর আমাকেই কেন টার্গেট করলো? আর এত মাস পরে উনাদের কেন মনে হলো আমি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের একজন সদস্য? আমার পরিবারও উদ্বিগ্ন, আমার ভাবি ও ভাতিজা(১৮ মাস বয়স) এইটা শুনার পর বাসায় চলে গেছে। তাহলে বুঝেন তারা কতটা শঙ্কিত আছে। উনাকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছি আপনি যদি প্রমাণ করতে পারেন আমি কোনো এক কালে ছাত্রলীগ ছিলাম, তাহলে আমি নিজে ছাত্রত্ব বাতিল করে এই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাবো।’
এ বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত গোলাম রব্বানী বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কাউকে হুমকি ধামকি দেই নি, এটা পুরোপুরি মিথ্যা মনে হয়।’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘একটা অভিযোগপত্র পেয়েছি। তবে এখনো দেখা হয়নি কার বিরুদ্ধে অভিযোগ এটি। আগামীকাল দেখে এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে।’