ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের(ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১ -২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা সাজিদ আব্দুল্লাহ আকস্মিক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তসহ ১৫ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।শনিবার (১৯ জুলাই) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এদিন কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে গায়েবানা জানাজা শেষে তারা প্রশাসন ভবন ঘেরাও, প্রধান ফটক অবরোধ এবং প্রশাসন ভবনের দেয়ালে বিভিন্ন দাবি সংবলিত লেখালেখি (দেয়াল লিখন) করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে দাবি সম্বলিত কাগজে স্বাক্ষর করেন উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার অভাব ও প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার কারণেই এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তারা বলেন, এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার পরও উপাচার্য বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন।
শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- মৃত্যুর দ্রুত তদন্ত ও প্রতিবেদন প্রকাশ, পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভির আওতায় আনা, পর্যাপ্ত স্ট্রিট লাইট স্থাপন, আবাসিক হলে প্রবেশ ও প্রস্থানে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা। এছাড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, বহিরাগত নিয়ন্ত্রণে পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়া, তদন্ত কমিটিতে শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি, প্রশাসনের নিয়মিত উপস্থিতি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করাসহ ৬ দিনের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদের আকস্মিক মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও শোকাহত। দেশের বাইরে থাকায় সরাসরি আমি উপস্থিত থাকতে না পারা আমার জন্য দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পরপরই আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। আমি বলেছি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে যতদ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন দাখিল করে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যে দাবিগুলো করছে সেগুলো অত্যন্ত যৌক্তিক দাবি। আমরা তাদের দাবির সাথে একমত। শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি।’
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৬টার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুরে সাজিদ আব্দুল্লাহর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল সাড়ে ৬ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ইবি থানা পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সাজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহিদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নং রুমে থাকতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়। সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যু নিয়ে অনেকের মনে উঠেছে নানা প্রশ্ন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল কর্তৃপক্ষ আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।