( নোয়াখালী-প্রতিনিধি- মোহাম্মদ শহিদ)
নোয়াখালীর কবির হাট উপজেলার চাপরাশির হাট ইউনিয়ন চাপরাশির হাট বাজারে অবস্থিত ইউনিয়ন ভূমি অফিস যেন এক দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। এই অফিসের ভূমি সহকারী ( তহশিলদার ) শাহ নেওয়াজ টাকা ছাড়া কোন কাজই করেন না। ভূমি সংক্রান্ত যেকোন সেবার বিনিময়ে হাতিয়ে নিচ্ছে তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা ।
এই অফিসে গ্রাহকদের হয়রানি চরম আকার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় , চাপরাশির হাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নামজারি, জমা খারিচ, খাজনা আদায়, জমির পর্চা (খসড়া) তুলা সহ ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজে সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অনৈতিক ভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা । চুক্তির টাকা ছাড়া কোন ফাইলই নড়ে না। টাকা দিলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ আদায় হয় না । ভূমি অফিসের সহকারী তহশিলদার শাহ নেওয়াজ গ্রাহক থেকে বাড়তি টাকা নেয়ার পরও বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার হয় এমনও অভিযোগ উঠেছে।
বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় শাহ নেওয়াজ সুবর্ণচর উপজেলায় চরজব্বর ভূমি অফিসে থাকাকালীন গ্রাহকদের হয়রানি এবং অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগে দুই মাসের মাথায় সুবর্ণচর উপজেলা চরজব্বর ভূমি অফিস থেকে তাকে কবিরহাট উপজেলা চাপরাশির হাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সহকারী তহশিলদার হিসেবে পাঠানো হয়। চাপরাশির হাট ভূমি অফিসে আসা জসিম নামের এক গ্রাহক জানান আমি ৪ শতাংশ জায়গা নামজারি করতে গেলে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আমাকে বলে নামজারি করতে হলে খরচ আপনাকে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে ।
এই বিষয় একাধিক গ্রাহক বলেন, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে । চুক্তি ছাড়া কোন কাজ হয় না এই অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তবে সহকারী তহসিলদার শাহ নেওয়াজ এর অনিয়মের মাত্রা এতটাই বেড়ে চলেছে তার উপর একাধিক গ্রাহক ক্ষুব্দ অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ও হয়রানির শিকার হয় । এভাবে যদি চলতে থাকে যেকোনো সময় সেবা প্রার্থীরা এই ভূমি অফিসে হামলা করতে পারে ।
সেবা প্রাপ্তির ৯০ শতাংশ লোকই চরম হয়রানির শিকার হতে হয় আজ না-কাল এইভাবে চলে দিনের পর দিন মাসের পর মাস । সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত হারে দাবিকৃত উৎকোচ না দিলে সেবা গ্রহীতারা পান না তাদের কাঙ্খিত সেবা এই বিষয় দলিল লেখক নাম (প্রকাশে অনিচ্ছুক ) একজন বলেন , চাপরাশির হাট ইউনিয়নে তহসিলদার শাহ নেওয়াজ আমার ইউনিয়নে মানুষদের চুষে খাচ্ছে, একটা নামজারি জন্য ৮/১০ হাজার টাকা করে নিচ্ছে জমির পরিমাণ বেশি হলে বেড়ে যায় টাকার অংক। তাছাড়া জমির খাজনার জন্য অতিরিক্ত টাকা নিয়ে রিসিট দেয় তার অর্ধেক, তার এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে দিন দিন অফিসের বদনাম হচ্ছে মানুষ তার কাজে ক্ষুব্দ হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা যারা দলিল লেখক আমাদের থেকেও তিনি ৮ থেকে ১০হাজার টাকা করে নেন, অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় তাকে চরজব্বর হতে চাপরাশিরহাট বদলী করা হয়। চাপরাশিরহাট অফিসের মত একটা গুরুত্বপূর্ণ অফিসে । তাকে শাস্তির বদল তাকেতো পুরস্কৃত করা হয়েছে। বিষয়টা হাস্যকর। , তিনি আরো বলেন এই টাকা উপজেলার ভূমি অফিসের বিভিন্ন দপ্তরে নাকি টাকা দিতে হয় এমনটা জানান, ভূক্তভোগীরা আরো জানান, চাপরাশির হাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দুর্নীতি এমন চরমে পৌঁছেছে সরকারি নীতিমালার বাইরে চুক্তি অনুযায়ী মোটা অংকের ঘুষ ছাড়া কোন নামজারি হয় না।
নামজারির জন্য ৮ থেকে ১০ হাজার থেকে শুরু করে মোটা অংকের টাকা আদায় করা হয়। উপজেলা ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন স্তরে ভাগ দেয়ার কথা বলে। ভুক্তভোগীদের দাবি সহকারী তহসিলদার শাহ নেওয়াজ সহ যারা এ এইসব কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এই বিষয় চাপরাশির হাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী তহশিলদার শাহ নেওয়াজ কাছে জানতে চাইলে, তিনি টাকা বিনিময়ে বিষয়টি দামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে এক প্রকার ব্যর্থ হন। এই বিষয় জানতে চাইলে কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূদম পুষ্প চাকমা বলেন, অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই সহকারী তহশিলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।