নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় প্রেমঘটিত সম্পর্কের জেরে বিষ (কীটনাশক) পানে সুমাইয়া আক্তার (১৫) নামে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহত সুমাইয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি গ্রামের দিনমজুর সাহাব উদ্দিন ও জোছনা আক্তার দম্পত্তির কন্যা। এ মৃত্যুকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, একই ইউনিয়নের নিলাম্বরখিলা গ্রামের মো. আরজু মেম্বারের ছেলে ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী পূর্ণ এর সাথে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ফাজিল মাদ্রাসায় পড়ার সময় দুজনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
মৃত্যু আগে সুমাইয়া চিরকূটে লিখেন, গত ১৫-২০ দিন ধরে পূর্ণ তাকে এড়িয়ে যাচ্ছিল। পূর্ণর অন্য এক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে চিরকূটে। এই থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে (সুইমাইয়া) আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কেন্দুয়া ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, মৃতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে আজ মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতলে মর্গে প্রেরণ ও অপমৃত্যু মামলা দায়ে করা হবে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মৃতে পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার বিষপান করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে সুমাইয়া। প্রথমে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। তবে ঢাকা পৌঁছার আগেই আজ (মঙ্গলবার) গাজীপুরের মাওনা এলাকায় পৌঁছানোর মুহূর্তে সুমাইয়ার মৃত্যু হয়।
সুইমাইয়ার মা জোছনা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার কোনো ছেলে সন্ত্বান নেই। মেয়েরাই আমার ভরসা ছিল। সুমাইয়া নিজেই তার সম্পর্কের কথা জানিয়েছিল। আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য পূর্ণই দায়ী। এর বিচার চান তিনি।
এ বিষয়ে পূর্ণ’র বড় ভাই আনিসুল হক মুঠোফোনে জানান, বর্তমানে তিনি কেন্দুয়ার বাইরে। বিষয়টি এলাকার কয়েকজনের কাছ থেকে ফোন পেয়ে জানতে পেরেছেন। আগে কিছুই জানতেন না তিনি।
তবে স্থানীয়দের কেউ কেউ দাবি করছেন, সুমাইয়া হয়তো তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। যদিও এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সুমাইয়ার মৃত্যুর খবরে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তবে পুলিশ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের তৎপরতায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। একটি তরতাজা প্রাণের এমন মর্মান্তিক পরিণতির জন্য দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।