নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় খারনৈ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওবায়দুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে হতদরিদ্রদের চাল আত্মসাৎের। ভিডব্লিউবি’র (বাস্তবায়িত ভালনারেবল উইমেন) আওতায় গত জানুয়ারী থেকে মে মাস পর্যন্ত এই পাঁচ মাসের চাল বিতরনের জন্য ঠিকই তিনি উত্তোলন করেন। কিন্তু এই চাল উপকারভোগীদের মাঝে বিতরনের ক্ষেত্রে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে অবিতরনকৃত চাল আত্মসাৎ করার এমন অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
খারনৈ ইউনিয়নে ভিডব্লিউবি (পূর্বের ভিজিডি) কর্মসূচীর আওয়তায় ১৯৪ জন উপকারভোগী রয়েছেন। পূর্বের ভিজিডি কার্ডধারীরা বিগত ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৪ মাস প্রত্যেক উপকারভোগী ৩০ কেজি করে চাল পেয়েছেন। সরকার ভিজিডি কর্মসূচী পরবর্তী ছয় মাসের জন্য ভিডব্লিউবি’র কর্মসূচীর নামে বর্ধিত করেন। ভিজিডি কার্ডে ২৪ মাসের বেশি স্বাক্ষর বা টিপসহির স্থান না থাকায় তালিকাভূক্ত উপকারভোগীদেরকে মাস্টাররোলের মাধ্যমে বিতরনের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু, খারনৈ ইউপি চেয়ারম্যান চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রত্যেক উপকারভোগীদেকের বিতরনের উদ্দেশ্যে পাঁচ মাসের চাল উত্তোলন করেন।
৩০ কেজি ওজনের বস্তা হিসেবে উত্তোলিত প্রত্যেক উপকারভোগী পাঁচ বস্তা চাল প্রাপ্য হলেও খারনৈ ইউপি’র চেয়ারম্যান ভিডব্লিউবি উপকারভোগীদের মাঝে ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণে চাল বিতরন করেন। কোন কোন এলাকার উপকারভোগীদেরকে দুই বা তিন বস্তা আবার কোন এলাকায় চার বস্তা চাল বিতরন করেন। এনিয়ে কোন কোন উপকারভোগী তাদের প্রাপ্য চাল দাবি করলে তাদের কাউকে গত ঈদুল আযাহ উপলক্ষ্যে ভিজিএফে’র আওতায় ১০ কেজি করে বিতরনের খোলা চাল থেকে ভিডব্লিউবি’র উপকারভোগীকে বিতরন করে শান্তনা দেন চেয়ারম্যান।
এ রকম অনিয়ম সম্পর্কে জানান, খারনৈ ইউনিয়েনের উপকারভোগী মমতা, পারুল, অর্পা, আকলিমা, ছালমা, শাহারা, কুলছুমা, হনুফা, খুদেজা, পারভিনসহ আরো বেশ কয়েকজন উপকারভোগীরা।
উপকরভোগীসহ স্থানীয়দের মতে, উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের উপকারভোগীরা পাঁচ বস্তা করে চাল পেলেও খারনৈ ইউপি’র ১৯৪ জন উপকারভোগীর মধ্যে ৩০ কেজির ওজনের কেউ দুই বস্তা, কেউ তিন বস্তা আবার কেউ চার বস্তা করে চাল প্রাপ্য হন। অবিতরনকৃত বাকি চাল চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক আত্মসাৎ করেছেন বলে এমন প্রশ্ন তাদের মাঝে বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান ওবায়দুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক মাস হয়েছে বিতরণ করেছি। ট্যাগ অফিসার ছিল। মাস্টাররোল কমপ্লিট আছে। একমাস পরে কে কি বললো এটা ব্যক্তি জেলাসি বলা চলে। আমি এখন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছি। সেজন্য অনেকে অনেকভাবে চিন্তা করে, কিভাবে ফাঁসানো যায়। এ ধরণের অনিয়মের সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নাই।
ট্যাগ কর্মকর্তা উপজেলার একাডেমিক সুপারভাইজার তারিকুল ইসলাম জানান, ছয় মাসের মধ্যে পাঁচ মাসের চাল উত্তোলন হয়েছে। আর এক মাসের বাকি আছে। এ রকম কোন অভিযোগ আমার আছে আসে নাই। আপনাদের (গণমাধ্যম কর্মী) কাছে তথ্য আসতে পারে। আমি চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে কনফার্ম করি, কিভাব কি করেছে। তবে ভিজিএফের’ চাল ভিডব্লিউডি তে দেওয়ার সুযোগ নাই।
কলমাকান্দা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, ভিডব্লিউডি’র চাল কেউ তিন বা চার বস্তা পাওয়ার কথা না। এ রকম অভিযোগ নিয়ে কোন উপকারভোগী আসেনি। এ রকম হওয়া কোন সুযোগ নেই। আমার ট্যাগ অফিসার সার্বক্ষীনক ছিল। মাস্টাররোলে উপকারভোগীদের ফিঙ্গার প্রিন্ট রয়েছে। চাল না পেয়ে থাকার তথ্য সত্য হলে উপকারভোগীরা আমাকে বলতে হবে। উপকারভোগীরা কেন আমাকে না বলে আপনাকে (গণমাধ্যমকর্মী) বলতে গেল। উপকারভোগীদের কিছু বলার থাকলে আমাকে বলতে হবে। যেহেতু ব্যবস্থা আমাকে নিতে হবে।