নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় অবৈধভাবে পরিচালিত ডায়ানোস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে। সোমবার (২৩ জুন) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খবিরুল আহসানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ অভিযানে পাঁচটি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে একটি ডায়ানোস্টিক সেন্টার সিলগালা এবং বাকি চারটি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারকে সতর্কতামূলক বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অভিযানে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান এবং বারহাট্টা থানা পুলিশের একটি দল অংশগ্রহণ করে।
এ অভিযান বারহাট্টা হাসপাতাল রোড, অডিটোরিয়াম এলাকা এবং এর আশেপাশের ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খবিরুল আহসান বলেন, এ অভিযান শুধুমাত্র শাস্তিমূলক নয়। বরং জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তার প্রশ্নে একটি নীতিগত পদক্ষেপ। আমরা চাই, প্রতিটি মানুষ নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্য সেবা পান। ইতিপূর্বে ও বিভিন্ন সময়ে আমরা এসব প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছি। কিন্তু তারা বারবার আইন ভেঙে জনস্বাস্থ্য নিয়ে অবহেলা করেছে। লাইসেন্স ছাড়া ডায়াগনোস্টিক সেবা চালু রাখা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমরা এধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতে ও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, যে কোনো বেসরকারি ডায়াগনোস্টিক সেন্টার পরিচালনার জন্য যথাযথ লাইসেন্স, প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান, চিকিৎসক এবং আধুনিক সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়। অভিযানে দেখা যায়, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানেই নেই নিয়মিত রেজিস্ট্রেশন, কিছু ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স, অদক্ষ কর্মচারী এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ। এসব অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরি রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, শিগগিরই উপজেলার প্রতিটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে তদারকির আওতায় আনা হবে এবং যারা লাইসেন্সহীন বা অদক্ষভাবে সেবা দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ অভিযান প্রমাণ করে, কোনো প্রতিষ্ঠানেরই অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ নেই। জনস্বাস্থ্য নিয়ে যারা গাফিলতি করবেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কড়া অবস্থান আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয়রা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। অনেকেই বলেন, ডায়াগনোস্টিক সেন্টার গুলো যেভাবে অবহেলা ও দায়িত্বহীনভাবে রোগ নির্ণয় করছিল, তাতে সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছিল। এখন তারা আশাবাদী, ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযান আরও জোরদার হবে এবং স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
এলাকাবাসী ও সচেতন মহল মনে করেন, আগামী দিনগুলোতেও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন শক্ত ভূমিকা পালন করবে।