নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে পৈতৃক বসতভিটা জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে গর্ভপাতের মতো মর্মান্তিক ঘটনাও ঘটেছে বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী শিউলী বেগম। সম্পত্তি রক্ষায় ও নিরাপত্তার দাবিতে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা হাছেন আলী (৬০) ও তাঁর স্ত্রী বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। হাছেন আলীর কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় এবং মেয়েরা বিবাহিত হওয়ায়, দীর্ঘদিন ধরে পৈতৃক ও ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছে একই গ্রামের মৃত গোলাম বক্সের পাঁচ পুত্র তারা মিয়া (৬২), আবুল কালাম (৫৯), শফিকুল ইসলাম মিলন (৪৭), এখলাছ উদ্দিন (৫২) ও আব্দুস সালাম (৫৫)।
হাছেন আলীর মেয়ে মোছা: শিউলী বেগম (৩৭) অভিযোগ করেন, তাদের বি.আর.এস. খতিয়ানভুক্ত ৮২৮ নং দাগে ০.২৩ একর জমির ওপর দুটি ঘর ও রান্নাঘরসহ দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু অভিযুক্তরা সম্পত্তির লোভে তাদের উচ্ছেদের অপচেষ্টায় লিপ্ত। এমনকি কয়েকবার শারীরিকভাবে আক্রমণ করে। একপর্যায়ে শিউলী বেগমের পেটে আঘাত লাগায় তার গর্ভপাত ঘটে বলে তিনি দাবি করেন।
স্থানীয় গ্রাম্য সালিশে একাধিকবার মীমাংসার প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন অভিযুক্তরা এবং বসতভিটার কিছু অংশে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০২১ সালে শিউলী বেগম নেত্রকোনা জেলা সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরও হুমকি-ধমকি অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের একজন আব্দুস সালাম বলেন, এই জমি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি এবং আমরা কোর্টের ডিগ্রিও পেয়েছি। তবে আপিলে যদি তারা রায় পায়, তাহলে আমরা জমি ছেড়ে দেব। মারামারির ঘটনা হয়েছে এবং আমরা ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছি।
এদিকে, ঘটনার বিষয়ে কেন্দুয়া থানার এএসআই আবু রায়হান বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে ঘর নির্মাণে নিষেধ করেছি এবং স্থানীয় সাংবাদিক ও নেতৃবৃন্দের সহায়তায় উভয়পক্ষকে নিয়ে সামাজিক সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু একটি পক্ষ সহযোগিতা না করায় অগ্রগতি হয়নি।
প্রতিবেশী মো. ইসলাম উদ্দিন (৬০) ও মো. হানিফ (৩৫) জানান, হাছেন আলী ও তার পরিবার অত্যন্ত নিরীহ ও গরীব। যেসব জায়গা তাদের নামে কাগজপত্রে রয়েছে। সেটাই দখলে নিয়েছে প্রতিপক্ষ। এটা খুবই দুঃখজনক।
বর্তমানে হাছেন আলীর স্ত্রী বাড়িতে একা অবস্থান করছেন এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় দিন পার করছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।