নিজস্ব প্রতিবেদক: যেদিকে তাকানো যায় শুধু কাঁদা আর গর্তেভরা। রাস্তা নয় যেনো ধান খেতে পরিনত হয়েছে রাস্তাটি। নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর থেকে মুন্সিপাড়া পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার লম্বা রাস্তাটি সংস্কারের জন্য রাস্তাটি খোদাই হলেও দুই মাস ধরে কোন কাজ করছেন না ঠিকাদার।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতার কারনে, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের রাস্তাটি যেনো মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। রাস্তার সংস্কার কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবীতে রবিবার (১৫ জুন) বিকেলে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন করছে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।
মানববন্ধনে মাদরাসা শিক্ষক মুফতী হারুনুর রশীদ খান বলেন, দুর্গাপুর শহরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি এখন খানাখন্দে পরিনত হয়েছে। কোন রোগী নিয়ে যেতে পারছিনা হাসপাতালে। রাস্তার পাশদিয়ে হেটে যাওয়ারও উপক্রম নেই। সামনে বর্ষা মৌসুম, দ্রুত রাস্তার কাজ বাস্তাবায়ন করা না হলে চরম সমস্যায় পড়তে হবে আমাদের।
ভাদুয়া বাজারের ধান ব্যবসায়ী বাদল সরকার বলেন, বাজারে ধান ১২শত টাকা মন। রাস্তা ভালো না থাকায় বাড়িতে বসে বিক্রি করতে হচ্ছে ৮শ টাকা মন। আমাদের এই ক্ষতি কে পুরণ করবে। সামনে জমিতে ধান রোপন করার সাহস পাচ্ছিনা। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে দুর্গাপুর ঘেড়াও করবো।
ডা. আক্তারুজ্জামান দুলাল বলেন, প্রসুতি মায়েদের চেকআপ, রক্ত পরীক্ষাসহ গুরুত্বপুর্ণ ঔষধের একমাত্র মাধ্যম দুর্গাপুর উপজেলা শহর। গুরুত্বপুর্ণ এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে সামান্য কাজ করে ফেলে রেখেছে। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে পুরো কাঁদায় পরিনত হয়েছে। যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় হেটেই যেতে হয় আমাদের। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার দাবী জানাই।
মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতী জিয়াউর রহমান বলেন, অত্র এলাকায় চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও স্মাতক পর্যায়ের মাদরাসা রয়েছে তিনটি। রাস্তা ভালো না থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারছেনা। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। সামনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এই রাস্তা সংস্কার না করা হলে অনেক শিক্ষার্থীদের ঘরে বসে থাকতে হবে। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাই।
মানববন্ধনে অন্যদের মাঝে বক্তব্য করেন, অটোরিকশা চালক হারুনুর রশীদ, বাইক চালক মো. বিল্লাল হোসেন, শিক্ষক আব্দুল হাকিম, মুফতী মাসুম বিল্লাহ, মুফতী মাহমুদ হাসান, মাওলানা এখলাস উদ্দিন প্রমুখ।
রাস্তা সংস্কার নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রায় আট কোটি টাকা ব্যায়ে কৃষ্ণপুর থেকে মুন্সিপাড়া পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে তিন ভাগের দুই ভাগ রাস্তাই খোদাই করা হয়েছে। কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি। বালু জটিলতা দেখা দেয়ায় কাজটি বন্ধ রয়েছে। কাজটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।