নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় আসমা ইউনিয়নের কুখ্যাত ডিমের বেপারী মিয়াচান মারপিট ও শ্লীলতাহানির মামলায় গ্রেফতার হয়েছে। মিয়াচানের অত্যাচারের শিকার হয়নি এমন লোক পাওয়া দুরূহ। অটোরিকশা চালক, পথচারী থেকে শুরু করে নিজের আত্মীয়-স্বজনরাও তার জুলুম থেকে রেহাই পাননি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে মিয়াচান ও তার মেয়ে সুমাকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মিয়াচান গুমুরিয়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে।
এরআগে গত গত ৯ জুন (সোমবার) নিজের চাচাতো ভাই ফুক্কুল মিয়ার জানাযার নামাজে ও ১০ জুন মিয়াচানের চাচা আ. খালেকের জানাজার নামাজে গিয়ে নিজের ভাতিজা ও ভাবিকে মারধর করে। এমন অভিযোগ এনে নিজের ভাতিজা বাদী হয়ে গত বুধবার (১১ জুন) রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ কারী আ. মান্নান উপজেলার গুমুরিয়া গ্রামের মৃত মুকতুল হোসেনের ছেলে।
জানা যায়, গত ৭ মে মিয়াচান মিয়ার বড় ছেলে সোহেল মিয়া অত্যাচারের শিকার হয়ে বাবার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছিল। এরপরও মিয়াচানের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষী দিতে সাহস পেতো না। গত ১০ জুন রাতে মিয়াচানের বিরুদ্ধে আর আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী মিলে মিছিল বের করে। মিছিলে তারা মিয়াচানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী তুলেন।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, বিভিন্ন ক্ষমতাধর রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় থেকে শত-শত মানুষের ওপর অত্যাচার চালিয়ে সমাজে ভীতি সৃষ্টি করেছিলেন ডিমের বেপারী মিয়াচান। নিজের ঘরের কর্মচারী, অটোরিকশা ও বিভিন্ন যানবাহনের চালক থেকে শুরু করে নিকট আত্মীয় স্বজনরাও রেহাই পেতো না তার অত্যাচার থেকে। একপর্যায়ে মিয়াচানের ভয়ে তার দ্বারে কাছেও কেউ আসতো না। তার দীর্ঘ দিনের নেশা হলো মানুষকে মারপিট করা ও মামলা টুকে দেওয়া। কিন্তু কেউ যখন কাছে আসে না, তখন সে নিজের সন্তানদের ওপর অত্যাচার শুরু করে। ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করতে বাদ যাননি মিয়াচান। একপর্যায়ে নিজের আত্মীয়-স্বজনরা এসব কাজে বাঁধা দিলে আত্মীয়-স্বজনদের ওপরও আক্রমনাত্মক হয়ে উঠেন মিয়াচান ও তার মেয়েরা।
স্থানীয় মেম্বার আশরাফুল আলম রিপন বলেন, মিয়াচানের অত্যাচার এতোটাই বেড়েছিল যে রাস্তার মানুষগুলোও তার ভয়ে কথা বলতো না। বিভিন্ন যানবাহনের চালক, পথচারী আত্মীয়-স্বজন তার অত্যাচার থেকে কেউ রেহাই পেতো না।
বারহাট্টা থানার ওসি কামরুল হাসান বলেন, মারামারির মামলায় মিয়াচান ও তার মেয়ে সুমাকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।