নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা আবদুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সরকারি জায়গার গাছ কেটে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ব্যক্তি গড়াডোবা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য রফিক মিয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের সীমানার ভেতরে থাকা সরকারি গাছ কেটে জমি দখল করে দোকান নির্মাণের কাজ শুরু করেন তিনি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না, কারণ অভিযুক্ত রফিক এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি।
ঘটনার খবর পেয়ে কেন্দুয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড মহোদয় সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। তিনি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন এবং আপাতত নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেন। তিনি আরও জানান, জায়গাটি পরিমাপ করে সরকারি মালিকানা নিশ্চিত হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে রফিক মিয়া আবারও নির্মাণ কাজ চালিয়ে যান।
এসময় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ কাজের ভিডিও ধারণ করেন এবং এলাকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। অভিযোগ উঠেছে, সাংবাদিকরা রফিক মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু ভিডিও প্রমাণের কথা বললে তিনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলেন। এ সংলাপের কল রেকর্ড সাংবাদিকদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশীদ বলেন, “এসিল্যান্ড স্যার এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে যান। যদি কেউ প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে থাকে, তা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
এ বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এমদাদুল হক বলেন, “আমি এসিল্যান্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাঠিয়েছিলাম। তিনি যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা যদি কেউ অমান্য করে থাকে, তাহলে তদন্তসাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরবর্তীতে এসিল্যান্ড মহোদয়ের সঙ্গে সরাসরি কথা হলে তিনি বলেন, “আমি নিজে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। জায়গাটি মেপে নিশ্চিত হলে, যদি প্রমাণ হয় এটি সরকারি জমি, তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
সরকারি জায়গা দখল, গাছ কর্তন এবং প্রশাসনিক আদেশ অমান্য করার মতো ঘটনায় স্থানীয় মানুষ, শিক্ষক সমাজ ও সচেতন মহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা দ্রুত এবং কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।