বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা নেই, আর সরকারেরও নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ। আজ আমাদের পুরো জাতি যে **সয়াবিন তেল, রাইস ব্র্যান তেল, সরিষার তেল** এবং অন্যান্য পরিশোধিত তেলের উপর নির্ভরশীল, তার নিরাপত্তা কি কেউ নিশ্চিত করছে?
আজ পর্যন্ত **সরকারিভাবে কোনো গবেষণা হয়নি** যে, এই তেলগুলো মানবদেহের জন্য কতটুকু নিরাপদ। পরিশোধনের সময় যে **ব্লিচিং পদ্ধতি** ব্যবহার করা হয়, তা থেকে **বিষাক্ত রাসায়নিক তৈরি হয় কিনা, তা কেউ জানে না।** শুধু কোম্পানির দেওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করে, জনগণ দিনের পর দিন ধীরে ধীরে বিষ খেয়ে যাচ্ছে।
—
## ✅ **সয়াবিন তেল: নিরাপদ নাকি বিষ?**
বাংলাদেশে সয়াবিন তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বহু আগে সতর্ক করেছে যে, **সয়াবিন তেল পরিশোধনের সময় “Hexane Gas” এবং “Bleaching Clay” ব্যবহার করা হয়, যা ক্যান্সারসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি তৈরি করে।**
কিন্তু বাংলাদেশে এই বিষয়ে **কোনো নিয়মিত পরীক্ষা হয় না।** কোম্পানি যা বলে, তাই আমরা বিশ্বাস করি।
—
## ✅ **সরিষার তেল: বিদেশে নিষিদ্ধ, অথচ আমরা খাচ্ছি গালভরা করে**
সরিষার তেলে থাকা **ইরুসিক অ্যাসিড (Erucic Acid)** হার্টের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
পশ্চিমা দেশগুলোতে সরিষার তেলকে খাওয়ার উপযোগী নয় বলে লেবেলিং করতে হয়:
👉 **”For External Use Only”** (শুধু গায়ে মাখার জন্য)।
কিন্তু আমাদের দেশে এটিকে স্বাস্থ্যকর তেল বলে প্রচার করা হচ্ছে।
—
## ✅ **রাইস ব্র্যান তেল: আসলে নিরাপদ নাকি ব্যবসার নতুন ফাঁদ?**
রাইস ব্র্যান তেল (Rice Bran Oil) বাজারে এসেছে অনেকদিন। বলা হয়, এটি কোলেস্টেরল কমায়।
কিন্তু এর **”Refining Process”-এ উচ্চ তাপমাত্রায় যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।**
বাংলাদেশে এখনো এর কোনো সেফটি প্যারামিটার নির্ধারণ করা হয়নি।
—
## ✅ **ট্রান্সফ্যাটের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি**
আইসিডিডিআরবি একটি গবেষণায় দেখিয়েছে,
👉 বাংলাদেশের তেলে **ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে ১০ গুণ বেশি!**
👉 কিন্তু এখনো সরকার এটি নিষিদ্ধ করেনি।
—
## 🔥 **ফলাফল কী?**
🔴 দেশে গ্যাস্ট্রিক, এসিডিটি, লিভার সিরোসিস, ক্যান্সারসহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
🔴 প্রতি বছর বাংলাদেশে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের বাজার প্রায় **১০,০০০ কোটি টাকারও বেশি।**
🔴 প্রতি ১০ জনের ৮ জন গ্যাস্ট্রিকের রোগী।
—
## ✅ **সরকারের উদাসীনতা কেন?**
👉 আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা আইন দুর্বল।
👉 বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটির কার্যক্রম কাগজে-কলমে সীমিত।
👉 ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা কার্যকর হয় না।
👉 জনগণ অসচেতন, মিডিয়া নীরব।
—
## 🌱 **সমাধান কী?**
১️⃣ খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে জাতীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট গঠন করা।
২️⃣ সকল ভোজ্য তেলের **”সেফটি প্যারামিটার”** নির্ধারণ করা।
৩️⃣ সরিষার তেলের উপর “Erucic Acid Content” পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা।
৪️⃣ ট্রান্সফ্যাট নিষিদ্ধ করা।
৫️⃣ খাদ্য নিরাপত্তা আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা।
৬️⃣ জনগণকে সচেতন করা।
—
## 📍 **এভাবে চলতে থাকলে, বাংলাদেশ ক্যান্সারের দেশ হবে**
আমাদের জাতি ধীরে ধীরে বিষ খাচ্ছে।
এখনই যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, আগামী প্রজন্ম চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে।
আমি মনে করি, **”বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা”** আজ আমাদের জাতীয় আন্দোলনের অংশ হওয়া উচিত।
> **”আমরা বেঁচে আছি শুধু আল্লাহর রহমতে, নইলে সরকার ও খাদ্য শিল্পের খপ্পরে এতদিনে আমাদের মাটির নিচে চলে যাওয়ার কথা ছিল!”**
—
**ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম**
চেয়ারম্যান,
সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট