দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক বছরে ২২২টি বন্যপ্রাণী ধরা পড়েছে যানবাহনের গতি কম এবং মাইক ও হর্ণ বাজানোর নিষেধ থাকলেও কেউ মানে না। গত এক বছরে ১০৪টি প্রাণী মারা গেছে। খাদ্য ও পানির সংকট, জল বায়ুর পরিবর্তন, পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রভাব, অবাসস্থলসহ বিভিন্ন কারণে বন্যপ্রাণীরা বন ছেড়ে লোকালয়ে এসে ধরা পড়ছে মানুষের হাতে। ফলে কোনো কোনো প্রাণী গাড়ি চাপায় অথবা মানুষের হাতে মৃত্যুর পরিণতিতে পৌঁছেছে।

বন্যপ্রাণিদের এমন দুঃখজনক পরিণতি অহরহ ঘটেই চলেছে। বন বিভাগের শ্রীমঙ্গল রেঞ্জ কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, সদ্যবিদায়ী ২০২৪ সালে খাদ্য, পানি ও আবাসস্থল সংকটে বন ছেড়ে লোকালয়ে আসা ২২২টি বন্য প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ১০৪টি প্রাণী মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এসব প্রাণী মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়। বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতীর বানর, মেছো বিড়াল, চিতা বিড়াল, বনবিড়াল, বিভিন্ন প্রজাতীর প্যাঁচা, মদনটাক, মুনিয়া পাখি, শকুন, তক্ষক, গন্ধগোকুল, অজগর, শঙ্খিনী সাপ, ‘রেড আইক্যাট’ সাপ, ধূসর ফণীমনসা ইত্যাদি।

তবে সচেতন মানুষ লোকালয়ে বন্য কিংবা বিপন্ন প্রাণী দেখলে বন বিভাগ বা শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে খবর দেন। খবর পেয়ে ফাউন্ডেশনের পরিচালক বন বিভাগের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে অক্ষত অবস্থায় প্রাণী উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে হস্তান্তর করেন।

এছাড়াও একাধিক সংগঠন ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনেকেই লোকালয় থেকে বন্য প্রাণী উদ্ধার করে বন বিভাগে হস্তান্তর করছেন। এছাড়াও ‘স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এনডেঞ্জার্ড ওয়াইল্ড লাইফ’ (সিউ) নামের আরও একটি প্রতিষ্ঠান বন্যপ্রাণী উদ্ধারে ভূমিকা পালন করছে।

উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলোর মধ্যে অনেক বন্যপ্রাণী এই দুটি প্রতিষ্ঠানের লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বন্য প্রাণী উদ্ধার করে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছে। বন বিভাগের বিভিন্ন অভিযানেও অনেকে অংশ নিয়েছে। এ বিষয়ে মৌলভীবাজার বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক(এসিএফ) জামিল মোহাম্মদ খান বলেন, বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন বা অন্যান্য মাধ্যমে অক্ষত অবস্থায় যেসব বন্যপ্রাণী আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এর মধ্যে জীবিত বন্যপ্রাণীকে লাউয়াছড়া বনে অবমুক্ত করা হয়েছে এবং মৃতগুলিকে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে লোকালয়ে বন্য প্রাণী ধরা পড়া বা লোকালয়ে ঢুকে পড়ার খবর পাই সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে এসে আমরা সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে সুস্থ করে অবমুক্ত করি। প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন লাউয়াছড়ার উপর দিয়ে বয়ে চলা রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। বন বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে বনের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় যানবাহনের গতি কম রাখার। মাইক ও হর্ণ না বাজানোর জন্য। কিন্তু কেউ সেটা মানছেন না।

যে কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, হরিন বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী যানবাহনের চাপায় মারা যাচ্ছে। বিশ্বখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘পরিবেশের ভারসাম্যহীনতায় অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবী মনুষ্য বাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। পরিবেশের এই ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারলে মানুষকে নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য অন্য কোনো গ্রহে আবাসস্থল খুঁজতে হবে। বন্যপ্রাণীর জন্য বন-জঙ্গল সৃষ্টি ও সংরক্ষণের গুরুত্ব এখানেই’। আমরা জানি, ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে ব্যাঙ ফসল রক্ষা করছে।

আর ব্যাঙ হচ্ছে সাপের খাদ্য। আবার গুঁইসাপ যদি সাপের ডিম না খায় তাহলে সাপের অত্যধিক প্রাদুর্ভাবে ভূ-পৃষ্ঠে মানব জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ত। এভাবেই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হয়। আমরা বন-জঙ্গল উজাড় করে বন্যপ্রাণীর জীবনধারণ ক্ষমতা অসম্ভব করে তুলেছি, তারাও কোনো না কোনোভাবে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অবদান রাখে। পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার কারণে বনের পাশের শুকিয়ে যাওয়া ছড়া বা খাল পার হয়ে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করছে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী। অবিবেচকের মতো বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি ও উন্নয়নমূলক স্থাপনার প্রভাবও বন উজাড় হওয়ার জন্য কম দায়ী নয়।

জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হওয়ার পিছনে দেশের প্রচলিত বন আইন উপেক্ষারও অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও পর্যটক আকৃষ্ট করতে অরন্য গহিনবনে রঙিন সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড বন্যপ্রাণী চলাচল ও প্রজনন চরমভাবে বাধাগ্রস্ত করে। যা বণ্যপ্রাণী বিলুপ্তিতে ভয়ানক ভূমিকা পালন করে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version