নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৮২৬ জন বন্দির মধ্যে ৩৩১ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। গত তিনদিনে তারা আত্মসমর্পণ করেছেন।
বুধবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন নরসিংদী জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. বদিউল আলম।
এ সময় তিনি জানান, বুধবার নরসিংদী কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ১৯০ কয়েদি আদালতের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেছেন। এনিয়ে পালিয়ে যাওয়া ৩৩১ কয়েদি আত্মসমর্পণ করেছেন। বর্তমানে কারাগারে নিরাপত্তায় ক্যাম্প নিয়োজিত রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আর জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মাইকিং করা হচ্ছে, যেন কয়েদিরা নিকটস্থ থানা, কারাগার বা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
জানা গেছে, দেশে চলমান সহিংসতার মধ্যে দুর্বৃত্তরা শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে নরসিংদী জেলা কারাগারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র ও গুলি লুট করে ৮২৬ আসামি ছেড়ে দেয়। এরই মধ্যে সোমবার (২২ জুলাই) জেলা প্রশাসন কারাগার থেকে পলায়নকারী সব কারাবন্দিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ প্রদান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কয়েদিরা আইনজীবীদের মাধ্যমে কারাগারে আত্মসমর্পণ করেন।
রে নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী নাজমুল ইসলাম বলেন, কয়েদিরা আইনজীবীদের মাধ্যমেই কারাগারে থাকেন। ঘটনার পর থেকেই আইনজীবীরা কয়েদির সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনের আশ্রয়ে নিয়ে আসার জন্য কাজ করছেন। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে তারা আত্মসমর্পণ করছেন। আমরা আশাবাদী ধীরে ধীরে আরও কয়েদিরা আত্মসমর্পণ করবেন।
নরসিংদী পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চলমান সহিংসতার ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় পৃথক আটটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কারাগারে হামলার ঘটনায় সাবেক জেলার কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেছেন। বুধবার নাশকতার ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ২৭ জনকে গ্রেপ্তার ও ৩৯টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, দুর্বৃত্তের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নরসিংদী জেলা কারাগার পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বুধবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে তিনি কারাগার পরিদর্শন করেন। নরসিংদী কারাগারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র লুট ও আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার পাঁচদিন পর কারাগার পরিদর্শন করেন তিনি।
এ সময় নরসিংদী ডিসি ড. বদিউল আলম, এসপি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানসহ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে হেলিকপ্টার যোগে নরসিংদী মুছলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন সেনাপ্রধান।