বন্ধ করলেন ইউএনও
দেওয়ান রানা, মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনার মদনে ষাঁড়ের লড়াইয়ে চলছিল জমজমাট জুয়ার আসর। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ শাহ আলম মিয়া অভিযান পরিচালনা করে তা বন্ধ করে দেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি ষাঁড় ও হুমায়ূন কবির নামের এক ব্যাক্তিকে আটক করা হয়।
মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বটতলা নামক স্থানের গনেশের হাওরে এমন ঘটনা ঘটেছে। আটককৃত হুমায়ূন কবির নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের আব্দুল খালেক মিয়ার ছেলে। আটক হওয়ার ষাঁড়ের মালিক না পাওয়ায় ষাঁড়টি মদন থানায় রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে এলাকার একটি কু-চক্রী মহল গণের হাওরে ষাঁড়ের লড়াইয়ের আয়োজন করে। এর আগেও একই ভাবে কাইটাইল ইউনিয়নে একাধিক স্থানে ষাঁড়ের লড়াইয়ের আয়োজন করা হয়। পুলিশ টাকা নিয়ে ষাঁড়ের লড়াইয়ের সহযোগিতা করায় এবার স্থানীয় লোকজন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কে জানানো হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, গণেশের হাওরে ষাঁড়ের লড়াইয়ের আয়োজন করেন কাইটাইল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কেশজানি গ্রামের জিয়া মেম্বার। পাশের উপজেলা কেন্দুয়ার বলাইশিমুল গ্রামের একটি ষাঁড়ের সাথে লড়াই হয় কেশজানি গ্রামের শাহ আলম মিয়ার ষাঁড়ের। অবৈধ এই ষাঁড়ের লড়াইকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জুয়াড়িরা রাত থেকেই গণেশের হাওরে জড়ো হতে থাকে। পরে ভোর ৫ টার দিকে ষাঁড়ের লড়াই ও জমজমাট জুয়ার আসর জমে। অবৈধ এই লড়ইায়ের জন্য থানা ম্যানেজ করার জন্য মোটা অংকের টাকা দেওয়া হয়। স্থানীয়দের এমন খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ইউএনও ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও আনসার সদস্যদের নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। পরে অভিযানে পুলিশও যুক্ত হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল গ্রামের ষাঁড়সহ হুমায়ুন কবির নামের একজনকে আটক করেন। পরে আটককৃত ব্যাক্তি ও ষাঁড়কে মদন থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় থানায় জুয়া আইনে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় হুমায়ুন কবির কে গ্রেপ্তার দেখিয়ে নেত্রকোনা আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে ষাঁড়ের মালিক কে? এ তথ্য এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দা কেশজানি গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও সুহেল মিয়া জানান,‘ মদন থানার পুলিশকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ষাঁড়ের লড়াই ও জুয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এ জন্য পুলিশ এমন কাজ বন্ধ করতে আসেনি। ইউএনও স্যার ফায়ার সার্ভিসের লোকজন নিয়ে এসে এটা বন্ধ করেছেন।’
এ ব্যাপারে মদন থানায় পরিদর্শক (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম জানান,‘ ষাঁড়ের লড়াইয়ের খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় জুয়া আইনে মামলা দিয়ে হুমায়ূন কবির নামের একজনকে মঙ্গলবার নেত্রকোনার আদালতে পাঠানো হয়েছে। লাড়াইয়ের একটি ষাঁড় থানায় আটক আছে যার মালিক এখনো পাওয়া যায়নি। কিন্তু টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, ওসি সাহেব ছুটিতে আছেন। যদি কোন পুলিশ সদস্য এর সাথে জড়িত থাকে তবে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ শাহ আলম মিয়া জানান,‘ এলাকাবাসীর সংবাদের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ভোরে গণেশের হাওরে অভিযান করে ষাঁড়ের লড়াই ও জুয়ার আসর বন্ধ করা হয়। সেখান থেকে এক ব্যাক্তিসহ একটি ষাঁড় আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’