তাসলিমুল হাসান সিয়াম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় তীব্র রোদ আর প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। দুপুর হলেই যেন আগুনের ফুলকী বইতে শুরু করে। সকাল ৮টার পর থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। রাত ৯ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গরমের মাত্রা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
২১ এপ্রিল শনিবার দুপুর ২ টা পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ ডিগ্রী সেলসিয়াস । তীব্র গরমে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। প্রকৃতির এমন আচরণে প্রাণ ওষ্ঠাগত। একটু স্বস্তি পেতে পুকুরে বা বিভিন্ন জলাধারে নেমে দীর্ঘ সময় গোসল করছেন অনেকে।
শহরের ডিবি রোড এলাকার রিকশাচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ভাই খুব বেশি গরম পড়ছে। রাস্তায় ভ্যান চালানো যাচ্ছে না। গরমে মাথা পুড়ে যাচ্ছে।
খোলাহাটির ইজিবাইক চালক শামীম হোসেন বলেন, গরমে জামা কাপড় সব ভিজে যাচ্ছে। সকালে গরম একটু কম থাকলেও দুপুরের পর অসহ্য গরম লাগে। বাইরে বের হওয়া যায় না। যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে কম। গাইবান্ধা – পলাশবাড়ী সড়কের কিছু জায়গায় রাস্তার পিস ( বিটুমিন) গলে গাড়ির টায়ারের সাথে উঠে যাচ্ছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলী বলেন, বেশ কয়েকদিন হলো প্রচণ্ড গরম পড়ছে। বৃষ্টির দেখা নেই। গরমে খেতের ফসল খেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে। মাঠে কাজ করা যাচ্ছে না। অনেক এলাকায় শ্যালো মেশিনেও পানি উঠছে না।
এদিকে, গরমের কারণে বেড়েছে তরমুজ ও ডাবের চাহিদা। বেড়েছে দামও। একশ টাকার নিচে ডাব মিলছে না। শহরের হকার্স মার্কেট এলাকার ডাব বিক্রেতা আশরাফুল ইসলাম বলেন, গরমে ডাব বিক্রি বেড়েছে, তবে রোদে দাঁড়িয়ে ডাব বিক্রি করতেও জীবন বেরিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া প্রচণ্ড গরমের কারণে বেড়েছে ডায়রিয়া, চিকেন পক্সসহ তাপজনিত রোগ। বিশেষ করে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বয়স্ক ও শিশুরা এতে হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ।
গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন ডা. কানিজ সাবিহা , প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, গরম জনিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে ও সুস্থ থাকতে হলে বেশি করে পানি পান করতে হবে। বাসি-পঁচা খাবার পরিহার করতে হবে। তাছাড়াও ভাজা-পোড়া খাবার খাওয়া যাবে না। রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। যথাসম্ভব ছায়া-শীতল স্থানে থাকতে হবে।