দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি-
ব্রিটিশ বিরোধী ও ঐতিহাসিক টংক আন্দোলনের নেত্রী কিংবদন্তি কুমুদিনী হাজংকে শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় শেষ বিদায় জানিয়েছেন স্বজন, আদর্শিক সহযোদ্ধাসহ সর্বস্তরের মানুষ।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বহেরাতলী গ্রামের বাড়িতে গতকাল শনিবার দুপুরে মারা গেছেন কিংবদন্তি নেত্রী কুমুদিনী হাজং। মৃত্যুর আগে জীবনের ৯২ টি বছর অতিক্রম করেছেন আজীবন সাম্য সমাজের স্বপ্ন দেখা এই মানুষটি।
আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমুদিনী হাজংয়ের মরদেহের অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্নে তার বাড়ি থেকে নেয়া হয় সোমেশ্বরী নদীপাড়ে গ্রামের শ্মশানঘাটে। সেখানে কুমুদিনী হাজংয়ের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম রকিবুল হাসান, কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড মনি সিংহের ছেলে দিবালোক সিংহ,বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক গীতিকবি সুজন হাজং সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
তার মৃত্যুতে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ রুহী,কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রেমন্ড আরেং,উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক,দুর্গাপুর প্রেসক্লাব পরিবার,সাংবাদিক সমিতি,পথ পাঠাগার পরিবার, বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠন,সিপিবি নেত্রকোনা জেলা ও দুর্গাপুর উপজেলা কমিটিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহের নেতৃত্বে টংক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয় দুর্গাপুরের হাজং সম্প্রদাযয়ের মানুষেরা। এরই অংশ হিসেবে কুমুদিনী হাজংয়ের স্বামী লংকেশ্বর হাজং অন্দোলনে জড়িত হন। তৎকালীন পুলিশ ১৯৪৬ সালে বগেরাতলী গ্রামে হানা দিয়ে কুমুদিনী হাজংকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে রাশিমনি হাজংয়ের নেতৃত্বে পুলিশকে হামলা চালানো হয়। এসময় কুমুদিনী হাজংকে পুলিশ নিতে পারেনি। তবে সেখানে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান রাশিমনি হাজং ও সুরেন্দ্র হাজংসহ কয়েকজন। সেই ঘটনার পর কুমুদিনী হাজংকে ঘিরে জ্বলে উঠে টংক আন্দোলন। এদিকে কুমুদিনী হাজংয়ের জীবন কর্ম ও ইতিহাস সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন তার আদর্শিক সহযোদ্ধারা।
কুমুদিনী হাজংয়ের ছেলে অর্জুন হাজং বলেন,মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। মারা গেছেন। তার আত্মার শান্তির জন্যে আপনারা সবাই দোয়া করবেন।