তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার কারাগারে আদালতের নির্দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলার হাজতবাস এর সঙ্গে মামলার ভুক্তভোগী নারীর বিয়ে সম্পন্ন করেছেন কারা কর্তৃপক্ষ। ১২বছরের প্রেমকে বলি দিয়ে পালিয়ে গিয়ে ও রক্ষা পেলেন না প্রেমিক আশিষ বাউরি। প্রেমিকার দায়ের করা মামলায় প্রেমিককে যেতে হলো কারাগারে আর প্রেমিকা ভুক্তভোগীকে পরিবারে থাকতে হয়। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থা নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় প্রায় ৭মাস ধরে কারাগারে আটকের পর হাজতির বিয়ের অনুষ্টান সম্পন্ন হয়েছে। আদালতের নির্দেশে বুধবার দুপুরে কারাগারের অফিসকক্ষে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়।
কারাগারে এক অভিনব বিয়ে অনুষ্ঠিত। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলার হাজতীর সাথে একই মামলার বিবাদীর বিয়ে হয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশে। আলোচিত এই বিয়ে এলাকায় কৌতুহলের সৃষ্টি করেছে।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ইন্দানগর চা বাগানের সদানন্দ বাউরীর ছেলে আশিষ বাউরী ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলায় বিচারাধীন অবস্থায় কারাভোগ করছিলেন। এই মামলার বিবাদী একই উপজেলার একই চা বাগানের কুঞ্জুমালের সাথে আজ দুপুরে কারাগারে তাদের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় জেল সুপার, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি সহ উভয়পক্ষের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে ভিকটিম ও উভয় পরিবারের সম্মতিতে সনাতন রীতিঅনুযায়ী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তারা।
রাজনগর থানায় মামলা নং জি আর ১২৮/২৩,মামলনং ১০। উল্যেখ্য ২০২৩সালের ১১আগষ্ট মাস থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় কারাগাভোগে ছিলেন।
দুই পরিবারের উপস্থিতিরা বলেন- এখন মেয়েও ছেলেকে গ্রহণ করেছে, ছেলেও মেয়েকে গ্রহণ করেছে। আদালতের সিন্ধান্তে শিশুসহ ৩টি মানুষের জীবন রক্ষা হয়েছে। নয়তো আসামীর জীবন জেলেই কেটে যেতো। মেয়েটির জীবনেও নানা ধরনের সমস্যা হতো। এতে আমরা শুকরিয়া জানাই। এখন তাড়াতাড়ি যেন মামলাটির নিষ্পত্তি হয় সেজন্য আমরা আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকবো।
বর কনে বলেন- মামলার পর আমাদের উভয় পক্ষের সম্মতিতে এই বিয়ে হয়েছে। এখন সবার কাছ একটাই চাওয়া যেন আমাদের দাম্পত্য জীবন সুখী হয়।
এ নিয়ে মো. মজিবুর রহমান মজুমদার, জেল সুপার, মৌলভীবাজার জেলা কারাগার।হাইকোর্টের নির্দেশে আশিষ বাউরি ও ভুক্তভোগীর বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে জেলা কারাগারে। এসময় বরের পরিবার ও ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সনাতন ধর্মীয় অনুসারে তাদের বিয়ে হয়েছে।
এবিষয়ে শাওন মজুমদার সুমন, সহকারী কমিশনার. জেলা প্রশাসক কার্যালয়. মৌলভীবাজার জানান- আমি জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে এখানে এসেছি। এখানে জেল সুপারসহ অন্য প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে দুজনের বিয়ে হয়েছে। আশা করি তারা ভবিষ্যতে সুখী হবে, ভালো থাকবে। যেহেতু মামলাটি এখনো বিচারাধীন আছে এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আদালত থেকে পাওয়া যাবে।
নবদম্পতির সুন্দর জীবন কামনা করেন এবং মামলা দ্রুত নিস্পত্তিসহ তারা যাতে একসাথে ঘর সংসার করতে পারেন সেই প্রত্যাশা সবার কাছে।