নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া এলাকায় ভাইরাল হওয়া একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে ৮ জনের বিরুদ্ধে সাইবার পিটশন মামলা দায়ের হয়। গত ২০ জুলাই ২০২২ইং তারিখ চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালে স্থানীয় এক ব্যক্তি জনৈক মোহাম্মদ জানে আলম বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর তদন্ত শেষে মামলার এজাহার নামীয় ১ নাম্বার আসামী মোহাম্মদ আজমীর শাহকে বাদ দিয়ে এজাহার বহির্ভূত স্থানীয় সাংবাদিক আবুল হাসনাত মিনহাজকে প্রধান করে মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন চট্টগ্রাম মেট্রো পিবিআই। এদিকে মামলায় জব্দকৃত আলামতের ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্টে সত্যতা মিলেনি। আবুল হাসনাত মিনহাজ দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার ও বাংলাদেশ অনলাইন সাংবাদিক কল্যাণ ইউনিয়ন (বসকো) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য,বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য,চট্টগ্রাম সাংবাদিক সংস্থার নির্বাচিত দপ্তর সম্পাদক,জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সদস্য হিসেবে কর্মরত আছে।
মামলার তদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনায়, উক্ত মামলার বাদীর মানিত ২ জন স্বাক্ষী মোঃ আলী আজগর প্রঃ টুটুল ও মোঃ ইকবাল দ্বয়ের উপস্থিতিতে আইসিটি মামলার ৩ জন এজাহারনামীয় আসামী মোঃ মাঈন উদ্দিন প্রঃ লেদু, মোঃ জাহেদ ইসলাম প্রঃ হোসেন ও মোঃ আলাউদ্দিন মিয়াদের মৌখিক স্বীকারোক্তির কথা উল্লেখ করে স্থানীয় বাকলিয়া এলাকার এজাহার বহির্ভূত সাংবাদিক আবুল হাসনাত মিনহাজকে ১ নাম্বার আসামী দেখিয়ে মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া না যাওয়ায় মূল এজাহার নামীয় আসামী আজমির শাহ’কে উক্ত প্রতিবেদনে অব্যহতি দেখানো হয়। অথচ এই প্রতিবেদনে ফরেনসিক রিপোর্টের ফলাফলের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে, ফরেনসিক পরীক্ষায় জব্দকৃত আলামতের কোন সত্যতা মিলেনি। এছাড়াও আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের সময় বাদীকে অবগত করেন এবং বাদীকে জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগে উল্লেখিত লিখিত বক্তব্যের সাথে হুবাহু মিল থাকায় তদন্তকালে পুনরায় বক্তব্য লিপিবদ্ধ করা প্রয়োজন মনে করে নাই মর্মে উল্লেখ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জানতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ), পিবিআই, চট্টগ্রাম মেট্রো
চট্টগ্রাম এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি মামলার বিষয়ে মোবাইল ফোনে কোন বক্তব্য অপারগতা দেখিয়ে অফিসে গিয়ে সরাসরি কথা বলতে বলেন। এদিকে মামলার বাদী মোঃ জানে আলম মুঠোফোনে বলেন, মামলার প্রতিবেদন কিরকম দিছে তিনি জানেন না, আদালতে গিয়ে প্রতিবেদন সংগ্রহ করবেন বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আইসিটি মামলার তদন্ত নির্ভর করে তথ্য প্রমাণের উপরে ভিত্তি করে। কোন সাক্ষীর মৌখিক সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করে কারো বিরুদ্ধে সাধারণত আইসিটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া যায় না। অবশ্যই ফরেনসিক রিপোর্ট লাগবে। মামলার তদন্তকালে এজাহার নামীয় কোন আসামীর অপরাধের সত্যতা না পেয়ে বাদ দিলে, ঐ মামলায় কোন এজাহার বহির্ভূত আসামী জড়িত থাকলে তাকে সিরিয়াল অনুযায়ী এজাহার নামীয় আসামীর শেষে তদন্তেপ্রাপ্ত সন্দিগ্ধ আসামী উল্লেখ করে মতামত জানাতে হয়। এছাড়াও তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করার পূর্বে বাদী কিংবা অভিযোগকারীকে অবগত করতে হয়।
আবুল হাসনাত মিনহাজ বলেন, মামলার বাদী জানে আলম দীর্ঘদিন যাবৎ নগরীর ১৭ নং রোড়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। আমি পত্রিকায় এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার পর থেকে জানে আলম আমার উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এছাড়াও আমার সাথে আইসিটির মামলার এজাহার নামীয় আসামী আজমির শাহ’র স্থানীয়ভাবে দ্বন্দ্ব চলে আসতেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, বাদী জানে আলম ও ১ নাম্বার আসামী আজমিরের নিকট থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আমাকে কোন নোটিশ না করে এজাহারনামীয় ১ নাম্বার আসামীকে বাদ দিয়ে তার স্থলে আমার নাম বসিয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরবর্তী আমার নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু হওয়ার পুলিশ আমাকে খোঁজাখুঁজি করলে আমি জানতে পারি যে, উক্ত আইসিটি মামলায় আমাকে আসামী করা হয়েছে। আমি বর্তমানে আদালতে আত্মসমর্পন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এমন মিথ্যা মামলার ওয়ারেন্টে পুলিশ অনৈতিক সুবিধা পেয়ে আমাকে চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকায় আদালতে যেতেও বাঁধা পেতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ বনেকের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও মানবাধিকার কর্মী মো: খায়রুল আলম রফিক বলেন,এসব সাজানো ও মিথ্যা মামলা অহেতুক সাংবাদিকদের হয়রানি করা হয়। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা যখন এমন প্রতিবেদন দাখিল করেন, তখনই মনে অনেক সন্দেহ জাগে। তাদের সঠিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা প্রমাণ করে। এই ঘটনায় দ্রুত মামলা প্রত্যাহার না করলে প্রয়োজনে সারাদেশে কর্মসূচি পালন করা হবে।