সময় ও নদীর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। নদীর স্রোতের মতোই দেখতে দেখতে চলে যাচ্ছে ২০২৩ সাল। ক্যালেন্ডার এর পাতায় আজ বছরের শেষ। বছরের সাথে জুড়ে থাকে নানান প্রাপ্তি এবং অপ্রাপ্তি। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তেইশের সংক্ষিপ্ত প্রাপ্তি এবং অপ্রাপ্তি তুলে ধরেছেন আবু হুরায়রা।
‘সুবিশাল ক্যাম্পাসে আমার প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তি’
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি প্রথমেই পেয়েছি পরিবেশ বান্ধব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা সুবিশাল ক্যাম্পাস। এখানে রয়েছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ আধুনিক সুসজ্জিত ল্যাব। এছাড়া রয়েছে অসংখ্য বই সমৃদ্ধ বিশাল পাঠাগার। এখানে নেই কোন ধরণের সেশন জট। সম্প্রতি GB-IEMS নামে একটি Student Portal চালু করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে সকল শিক্ষার্থীদের জন্য Unique Id. এনালগ যুগের ভোগান্তি পেছনে ফেলে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করলো গণ বিশ্ববিদ্যালয়। যার সুফল আমরা ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছি।অপ্রাপ্তির প্রথমেই বলতে হয় শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোনো পরিবহন ব্যবস্থা। যা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবী। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে লিফট থাকলেও তা সর্বদা চালু থাকেনা এবং নেই র্যাম্পের ব্যাবস্থা। তাই দুঃখের সাথে বলতেই হয় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিবন্ধীবান্ধব নয়। এছাড়াও প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কাজে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
অনেক অনেক প্রাপ্তির মাঝেও যতটুকু অপ্রাপ্তি আছে, আশা করি আগামী দিনগুলোতে আমরা সবাই মিলে সমাধান করবো এবং আমাদের প্রাণের গণ বিশ্ববিদ্যালয় হবে আরো উন্নত। সুগম হোক আগামীর পথচল।
বুশরা আহমেদ নহর,
১ম বর্ষ,
ফার্মেসী বিভাগ।
‘বিগত বছরের অপ্রাপ্তিগুলো পূর্ণ হওয়ার প্রত্যাশা’
বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত চিন্তা মানসিকতা ও শিক্ষা অর্জনের স্থান। কিন্তু সেই স্থানটাই যদি এ সমস্ত গুণের পরিচয় বহন করতে, না পারে তাহলে সেটা জাতির জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। বিশ্ববিদ্যালয় হবে রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন এবং ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে। আমাদের সবার প্রিয় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মানেই টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করা। এই ধারণার পরিবর্তন আনা এবং দেশের মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত পরিবারের মেধাবী ছেলে-মেয়েদের স্বল্প খরচে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা। আমি মনে করি গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য মাথায় রেখে সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার সহায়তা করা। লেট সেমিস্টার ফি বাবদ জরিমানা না করা এবং মেধাবীদের যে বৃত্তি ব্যবস্থা ছিল সঠিকভাবে প্রদান করা। স্বল্প খরচে আমদের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমাল সায়েন্সেস , ফার্মেসি, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি ছাড়াও অন্যান্য উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে গবি।
তবে কিছু প্রত্যাশা রয়েছে ভার্সিটির প্রতি যেমন আমাদের ল্যাব ফ্যাসিলিটিস গুলো আরো উন্নত করা, ক্লাস রুমের সংকট কাটিয়ে উঠা, শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহনের ব্যাবস্থা করা, শিক্ষকদের সংকট কাটিয়ে উঠা এবং হলের ব্যবস্থা করা।
এইচ এম সুমন,
২ য় বর্ষ,
ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদ।
‘জীবনে রঙিন অধ্যায়ে রয়ে যাবে ২০২৩’
ঘরের দেয়ালের আর পড়ার টেবিলের ক্যালেন্ডার পাল্টে দেওয়ার সময় এলো। জীবন থেকে কেটে গেলো আরো একটি বছর। বহমান সময়ের পরিক্রমা ও প্রকৃতির নিয়ম মেনে মহাকালের অতল গহ্বরে হারিয়ে গেলো আরো একটি বছর। নতুন বছরের আগমনী বার্তা চলে এসেছে। ২০২৩ সালের যাত্রা শুরু করেছিলাম বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে যতটুকু সম্ভব অর্জনের চেষ্টা করেছি। অর্জন করেছি একাডেমিক জ্ঞান, জীবনে চলার পথে র্অজন করেছি অনেক অভিজ্ঞতা। জীবনের রঙ্গীন অধ্যায়ে রয়ে যাবে ২০২৩ সালটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে হেটে চলা বাদামতলায় বন্ধুদের সাথে বছরজুড়ে আড্ডা। আমাদের জীবন থেকে আরো একটি বছর অতিক্রম করে চলে গেলো। প্রতিটি বছরই আমাদের জীবনে রেখে যায় কিছু প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তি। প্রাপ্তি সবার জীবনেই থাকবে। অপ্রাপ্তির নেই শেষ। আগামী বছর অপ্রাপ্তি গুলো অর্জনের চেষ্টা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
শারমিন আক্তার শান্তা,
৩য় বর্ষ,
আইন বিভাগ।
আমার ২০২৩: অভিজ্ঞতা, অর্জন ও পরিবর্তন
পুরনো আকাশ বিদায় নিয়ে নতুন সূর্য স্বাগত জানাই ভালোবাসায়। অতীতকে স্মৃতি করে নিয়ে, ভবিষ্যতের আশা আনছি সঙ্গে লালনে।”
বছরের শেষে এসে এই অনুভূতির সাথেই ২০২৩-কে বিদায় জানিয়ে ২০২৪ কে বরণ করে নিতে চাই। তবে বিদায়ের আগে স্মৃতির পাতায় একবার চোখ বুলিয়ে নিতে চাই। এই বছর জীবনের নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত গনিতে অধ্যায়নের সাথে। জীবনে নতুন এক রাস্তার সাথে পরিচিত হয়েছি, যেখানে আমি প্রবাদ, বিজ্ঞান, শিক্ষা, অল্প অনুসন্ধান, ক্রিয়া এবং সংস্কৃতিমনা বিভিন্ন সংগঠন এবং মানুষের সাথে পরিচিত হয়েছি। সময়ের সাথে সাথে এই বছর আমি অনেক মানুষ জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেছি। উচ্চশিক্ষার জন্য আমাকে বাসা থেকে পরিবার থেকে দূরে একা থাকতে হচ্ছে। এতে আমি অনেক বেশি আত্মনির্ভরশীল এবং দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছি। আমার জীবনে এই বছরের অন্যতম এক বিশেষ দিন ছিলো নিজের উপার্জনের প্রথম টাকা হাতে পাওয়ার দিনটি। সময় ভালো বা খারাপ যেমনই হোক সব সময়ই আমি আমার পরিবারকে পাশে পেয়েছি। অর্জন বলতে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি। যা আমাকে আগামী দিনগুলোর জন্য সাহস এবং শক্তি যোগাবে।
মশরুক মাহমুদ,
১ম বর্ষ,
ফলিত গণিত বিভাগ।