আশরাফুল ইসলাম,
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি।

কিশোরগঞ্জের যশোদল ইউনিয়নে মুসলিমপাড়া গ্রামে পারিবারিক জায়গাজমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মো. আফির উদ্দিন নামে এক স্বাস্থ্য সহকারী, তার ছেলে, ছোট ভাই, দুই ভাতিজাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। দুর্ঘটনার ঘটনাকে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত দেখিয়ে মো. কালু মিয়া নামে তারই এক ভাতিজা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। অথচ মামলায় উল্লেখ করা ঘটনার সময়ে স্বাস্থ্য সহকারী মো. আফির উদ্দিন এইচপিভি টিকাদানের সরকারি কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এ ছাড়া তার ছেলে কিশোরগঞ্জ মিনিস্টার হাইটেক পার্ক এ ( এস এম ও) পোস্টে কর্মরত ছিলেন। এবং ভাই-ভাতিজারাও নিজ নিজ কাজে অন্যত্র ব্যস্ত ছিলেন। আদালতের আদেশে গত ২৭শে অক্টোবর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি রেকর্ড হওয়ার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন স্বাস্থ্য সহকারী আফির উদ্দিন। এ ছাড়া মামলার কারণে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন তিনি। এ পরিস্থিতিতে তিনি কোনো উপায় না পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের শরণাপন্ন হয়ে এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়েছেন। ভুক্তভোগী মো. আফির উদ্দিন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের মুসলিমপাড়ার মৃত ইসমাইলের ছেলে এবং সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী। তিনি জানান, মুসলিমপাড়া গ্রামে তাদের বাড়ির পারিবারিকভাবে চলাচলের জন্য চার ফুট রাস্তা নির্ধারণ করা রয়েছে। কিন্তু এই রাস্তা নিয়ে তার ভাই-ভাতিজাদের সঙ্গে তারই ভাতিজা মো. কালু মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো।এ রকম পরিস্থিতিতে মো. কালু মিয়া অটোরিকশা চালাতে গিয়ে গত ১৬ই অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেটের সামনে দুর্ঘটনার শিকার হয়। দুর্ঘটনা সে হাতে ব্যথা পায়। এই দুর্ঘটনায় আহত হওয়াকে পুঁজি করে মো. কালু মিয়া গত ১৯শে অক্টোবর আদালতে দুই চাচা মো. আফির উদ্দিন ও সাফির উদ্দিন এবং তিন চাচাতো ভাই ইমরান, মামুন ও কফিল মিয়াকে আসামি করে হামলা, হত্যার উদ্দেশ্যে জখম, শ্লীলতাহানি, ক্ষতিসাধন চুরি ও হুকুম দানের অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। আদালতের আদেশে গত ২৭শে অক্টোবর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। অথচ মামলায় উল্লেখ করা ঘটনার সময়ে মো. আফির উদ্দিন স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে মারিয়া ইউনিয়নের অবস্থিত টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট টিকাদান কেন্দ্রে এইচপিভি টিকাদানের সরকারি কাজে নিয়োজিত ছিলেন। সরকারি এ দায়িত্ব পালনের প্রমাণ হিসেবে মাইক্রোপ্ল্যান ও টালিশিট ছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার প্রত্যয়নপত্র রয়েছে। একইভাবে মামলায় উল্লেখ করা ঘটনার সময় স্বাস্থ্য সহকারী মো. আফির উদ্দিনের ছেলে ইমরান জেলা শহরের পুরানথানা এলাকার কিশোরগন্জ মিনিস্টার মাইওয়ান হাইটেক পার্ক এ ( এস এম ও) পোস্টে শো-রুমে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ ছাড়া মামলার অপর তিন আসামি মো. আফির উদ্দিনের ছোট ভাই সাফির উদ্দিন এবং দুই ভাতিজা মামুন ও কফিল যার যার কাজে বাড়িতে ও ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলেন। স্বাস্থ্য সহকারী মো. আফির উদ্দিন জানান, কালু মিয়ার দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মুরাদ মিয়া, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হোসনা আক্তারসহ এলাকার বেশির ভাগ মানুষই জানেন। এরপরও বিষয়টিকে হামলায় মারপিটে আহত দেখিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনদের ফাঁসাতে মামলা করেছে কালু মিয়া। মামলার কারণে তিনিসহ তার স্বজনেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন স্বাস্থ্য সহকারী আফির উদ্দিন ও তার স্বজনরা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version