শার্শা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা কলারোয়ায় প্রশাসনের অবহেলায় বালু দস্যুরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রভাবশালীরা অবৈধ ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমি বা পুকুর থেকে প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাক বালু উত্তোলন করছে। উত্তোলনের পরে তা আবার অবৈধ ডাম্পার ট্রাকে বহন করে শার্শার বাগআঁচড়াসহ যশোর সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে ওই গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, ফসলি জমি, ঘরবাড়ি ও জনসাধারণ হুমকির মুখে পড়েছে।
ভুক্তভোগীরা বালু উত্তোলন ও অবৈধ ডাম্পার ট্রাক চলাচল বন্ধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেও ফল পাচ্ছে না। তারা এ ব্যাপারে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সবার কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব কেরালকাতা গ্রামের মাঠে ভেকু মেশিন দিয়ে প্রায় তিন মাস ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। প্রতিদিন তারা শত শত ট্রাক বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে লাভবান হলেও এলাকার ফসলি জমি, রাস্তা, ও বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। এতে দিন দিন ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
কেরালকাতা গ্রামের কয়েকজন বলেন, বালু দস্যুরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বাধা দেয়ার সাহস পায় না। এরা অবৈধ ভেকু মেশিন দিয়ে পুকুরের গভীর থেকে বালু উত্তোলন করছে। এতে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় শত শত বিঘা আবাদি জমি ভাঙনের আশঙ্কাও আছে। ভুক্তভোগীরা আরো জানান, রাস্তার পাশেই আামাদের বাড়ি, ধুলা বালুর কারনে ঠিকমত দুমুঠো ভাতও খেতে পারিনা, কারণ ভাত খাওয়ার সময় ধুলা বালি ভাতে উপরে এসে পড়ে। এছাড়াও রাস্তার পাশে কুল’বাগান ও বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
কাজিরহাট গার্লস স্কুলের কয়েকজন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানায়, গ্রামের রাস্তায় ডাম্পার ট্রাক চলাচলের কারণে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার সময় ও স্কুল ছুটির শেষে বাসায় ফেরার সময় দুর্ঘটনার ভয়ে থাকি। আর ধুলাবালুর কারণে আমাদের শ্বাস-নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
এ বিষয়ে বালু উত্তোলনকারী পূর্ব কেরালকাতা গ্রামের রাশেদের কাছে বালু উত্তোলন ও বিক্রির অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছেন। অনুমতি কার কাছ থেকে নিয়েছেন জানতে চাইলে এব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এবিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কৃষ্ণা রায় বলেন, বালু উত্তলনের বিষয়টি আমি জানিনা, খোজ খবর নিয়ে বালু উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য: সরকারের ২০১০ সালের বালুমহল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উম্মুক্ত স্থান, নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এ ছাড়া সেতু, কালভার্ট, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি- বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। অথচ বালু দস্যুরা সরকারি ওই আইন অমান্য করে কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতায় ভেকু মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।