ঘুর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবঃ কমলগঞ্জে আমন ধান ও রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি
কমলগঞ্জ(মৌলভীবাজার)প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ঘুর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে গত দুদিন বৃষ্টি ও ধমকা হাওয়ায় আমন ধান ও শীতকালীন সবজীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাকা আমন ধানের মাঠ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। বৃষ্টির কারণে অনেক কৃষক জমি থেকে পাকা আমন ধান কাটতে না পারায় লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন। এছাড়া রোপনকৃত শীতকালীন সবজী নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙ্গে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হয়ে পড়লে শুক্রবার বিকেল থেকে ৮/১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।
কৃষকেরা জানান, ঘুর্ণিঝড় মিধিলির কারণে গত দুই দিনের বৃষ্টি ও বাতাসে আমন ধান মাটিতে ফেলে দিয়েছে। এখন আমন ধান কেটে ঘরে তোলার সময়। কিন্তু বৃষ্টিতে ধান কাটার সর্বনাশ করে দিয়েছে। শুধু আমন ধান নয় রবি ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সদ্য রোপনকৃত শীতকালীন সবজীর চারা এখন নষ্ট হয়ে যাবে।
সরেজমিনে উপজেলার শমশেরনগর, পতনঊষার, রহিমপুর, মুন্সীবাজার ও সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন আমন ধানের খেত ও রবিশস্য ফসল দেখা যায়, বাতাস ও বৃষ্টির কারণে পাকা আমন ধান এলোমেলো ভাবে মাটিতে শুয়ে পড়েছে। যেগুলো শুয়ে পড়েছে এগুলো নিচে ওপরে পানি জমে আছে। পাকা ধান পানিতে থাকায় নষ্ট হওয়ার শঙ্কা বেশি রয়েছে। এছাড়া সদ্য রোপনকৃত শীতকালীন সবজীর ছোট ছোট গাছ মাটিতে শুয়ে পড়ে আছে। এছাড়া ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙ্গে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হয়ে পড়লে ৮/১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। বিদ্যুৎ কর্মীরা বৈদ্যুতিক লাইনের উপর পড়া গাছ সরিয়ে অনেক স্থানে শুক্রবারে রাতে এবং শনিবার সকালে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরে ১৭ হাজার ৩০৮ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। কৃষকেরা গত একসপ্তাহ ধরে ধান ঘরে তুলেছেন। এ ছাড়াও ১ হাজার ৫৯৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি ও ৫৫৫ হেক্টর জমিতে আলু, ২৭৯ হেক্টর টমেটো ও ৪৬৬ হেক্টর জমিতে শরিষা চাষ করা হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে পাকা ধান ও সবজির কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।
কৃষক রাহিন মিয়া বলেন, আমি ২ একর জমির মধ্যে আমন ধান চাষ করছি। আমার ধান পুরোপুরি পেকে গেছে। শনিবার সকালে খেতে গিয়ে দেখি দুই দিনের বৃষ্টিতে সব ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন বলে তিনি জানান। রহিমপুর ইউনিয়নের কৃষক উত্তম কুমার পাল বলেন, আমার প্রায় দুই একর জমির আমন ধান ও প্রায় এক একর জমির রবিশস্য ফসল একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। টানা বৃষ্টি ও বাতাসে আমার মতো অনেক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, মিধিলির প্রভাবে পাকা আমন ধান ও শীতকালীন সবজীর কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। পানি দ্রুত সরে গেলে পাকা ধান কাটতে হবে।