কমলগঞ্জ(মৌলভীবাজার)প্রতিনিধিঃ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির শিশুদের জন্য একজন ইউটিউবারের উদ্যোগে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার(৯ নভেম্বর) সকালে অতিথিদের নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি উদ্বোধন করা হয়। এর আগে খাসিয়াপুঞ্জির শিশুদের পড়াশোনার দুর্ভোগের কথা সম্প্রতি ভিডিওতে প্রকাশ করে ইউটিউবভিত্তিক চ্যানেল ইনফো হান্টার। তাদের ফেসবুক পেজেও ভিডিওটি প্রচার করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রচারের পর ওই ভিডিও দেখে খাসিয়াপুঞ্জির শিশুদের দুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে আসেন জার্মান, লন্ডন, আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪ জন ব্যক্তি। তাদের সহায়তায় লাউয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জির দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটে।
৪০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চালু হয় এই বিদ্যালয়।  দু’জন শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত হবে বিদ্যালয়টি। একজন খাসিয়া ভাষা ও একজন বাংলা ভাষায় পাঠদান করাবেন শিক্ষার্থীদের।

বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয়টির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইনফো হান্টারের প্রতিষ্ঠাতা সাকিবুর রহমান, ব্যবসায়ী সৈয়দ ইশতিয়াক বাবেল, আসাদুর রহমান, খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফিলা পতমী, প্রচার সম্পাদক সাজু মার্ছিয়াং প্রমুখ।

স্থানীয় খাসি অভিভাবক সাজু মার্ছিয়াং জানান, অনেকদুর বাচ্চাদের নিয়ে পড়াশোনা করনো আমাদের জন্য সমস্যা ছিল। আমরা একদিন নিয়ে গেলে বাকি ৫ দিন নিয়ে যেতে পারতাম না। টাকা পয়সা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় দুরবর্তী থাকায় এইসমস্যা ছিল। সম্প্রতি ইনফো হান্টার চ্যানেলের প্রতিষ্টাতা সাকিবুর রহমান আমাদের স্কুলের সমস্যা নিয়ে ফেইসবুক ও ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ করেন। এতে করে অনেক ভাই আমাদের সমস্যা বুঝতে পারেন। সাকিবুর ভাইয়ের কারণে আজ আমরা স্কুলটি পেলেম। আমাদের কষ্টের অবসান ঘটলো।
নব নির্মিত এই স্কুলের শিক্ষক সামসুন্নাহার ও এলটি জানান, এখানে বেসরকারী স্কুলটি হওয়ার পর আমাদের নিয়োগ দিয়েছে স্থানীয় খাসিয়া পুঞ্জির নেতৃবৃন্দ। আমরা দুজন শিক্ষক পাঠদান করাবো। একজন বাংলা ও একজন খাসি ভাষার উপর ক্লাস নিব।’

এ বিষয়ে ইনফো হান্টারের প্রতিষ্ঠাতা সাকিবুর রহমান বলেন, আমি যখন আমার ইউটিউব ও ফেইসবুক পেজে এটা আপলোড দিই, তখন লাখ লাখ মানুষ দেখে। তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ১টা প্রাথমিক স্কুলের। পরে ভাবলাম একটা স্কুলের ব্যবস্থা করে দেব। আমার ভিডিও দেখে অনেকে সাড়া দেন। এর মধ্যে ৪ জনের সহযোগীতায় আমি স্কুলের ব্যবস্থা করে দেই। তাদের দীর্ঘদিনের সমস্যার কিছুটা হলেও অবসান ঘটলো। স্কুলটা করতে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা লেগেছে। সব টাকাই বিদেশী ৪ জন বন্ধুর মাধ্যমে পাই। তিনি আরও বলেন, অন্যান্য পুঞ্জিগুলোকে এভাবে সহযোগিতা করব। আমার মানবিক ভাইদের সহযোগিতায় এই কাজগুলো ধারাবাহিকভাবে করে যাব।

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ও লাউয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জির প্রধান ফিলা পতমী বলেন, স্কুলের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনেকবার গিয়েছি, কেউ পাত্তা দেয়নি। আজ সাকিবুর ভাইয়ের মাধ্যমে আমাদের বাচ্চারা স্কুল পেয়েছে উনাকে খাসিয়া পুঞ্জির সবার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version