তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
হাজারো মানুষের একটি সেতুর অভাবে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষের দুর্ভোগের চরম পর্ব। ইউনিয়ন দুটি হলো উপজেলার সদর ইউপির জায়ফরনগর ও পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়ন। সেতু না থাকায় বাঁশের সাঁকোই ছিল এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসার স্থল। প্রতিবছর এলাকাবাসী চাঁদা তুলে এই সাঁকোটি মেরামত করে চলাচল করত। যুগের পর যুগ সাঁকোটি নিয়ে এলাকাবাসীর ভোগান্তি হলেও দেখার যেন কেউ ছিল না। বলছিলাম উপজেলার জুড়ী নদীর উপর খালের মুখ ব্রিজের কথা।
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার হলেও তার পর থেকে অনেক সরকার আসা যাওয়া করলেও এ দুই ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের ওই এলাকার মানুষের একটি ব্রিজ ছিল স্বপ্নের মত। প্রতিটি স্থানীয় এবং জাতীয় নির্বাচন এলেই ভুক্তভোগী বাসিন্দারা ব্রিজের আশ্বাসে বুক ভড়া ভড়সা নিয়ে থাকতো। নির্বাচিত হবার পর অনেকেই কথা রাখেন নি। কিন্তু কেউ কথা না রাখলেও কথা রেখেছেন মৌলভীবাজার-১ বড়লেখা ও জুড়ী সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, এমপি। অবশেষে পরিবেশমন্ত্রী হাজারো মানুষের স্বপ্ন’কে বাস্তবে রূপান্তরিত করলো।
এলাকাবাসীর সূত্রের বরাতে জানা যায়, একটি সেতুর অভাবে দেশ স্বাধীনের পর থেকে বাঁশ দিয়ে তৈরি সাঁকো দিয়ে লোকজন যাতায়াত করত। সাঁকো দিয়ে অত্রাঞ্চলের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পড়ালেখা করতে নিয়মিত চলাচল করত। ফলে, সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন থাকতেন। বিশেষ করে এটি হাকালুকি হাওরের শত শত কৃষকের যাতায়াতের অন্যতম রাস্তা হওয়ায় কৃষকদের দুর্ভোগ ছিল অসহনীয়। অবশেষে এই জায়গায় সেতু নির্মাণ করে দেওয়ায় এলাকাবাসী পরিবেশমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অফিস (এলজিইডি) সূত্রের বরাতে জানা যায়, পরিবেশমন্ত্রীর নির্দেশনায় SDIRIIP প্রকল্পের আওতায় খালেরমুখ বাজার- হাঁকালুকি হাওর রাস্তায় জুড়ী নদীর উপর ৩০ মিটার দীর্ঘ পিএসসি গার্ডার ব্রীজটি ২ কোটি ৯১ লক্ষ ৭৬ হাজার ৯৭৫ টাকা ব্যায়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী এলজিইডি বাস্তবায়ন করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী বহু সরকার আসলেও জুড়ী নদীর উপর ওই সাঁকোর স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আমাদের এলাকার বাসিন্দারা তাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে আসা-যাওয়াসহ তাদের যাতায়াত করতে গিয়ে একান্ত বাধ্য হয়ে প্রতিনিয়ত এ সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করত। পরিবেশমন্ত্রী আমাদের এলাকায় এ ব্রীজটি নির্মাণ করে দেওয়ায় সাধারণ মানুষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের দীর্ঘদিনের চরম দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। আমরা এলাকাবাসী মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
সাবেক ইউপি সদস্য জমির আলী বলেন, এ ব্রীজটি নির্মাণ হওয়ার ফলে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ সহ এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরের শত শত কৃষকের যাতায়াতের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। পরিবেশমন্ত্রী আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিংকু রঞ্জন দাস ও বদরুল ইসলাম বলেন, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার উন্নয়নের রূপকার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন।
জুড়ী ও বড়লেখার উন্নয়ন প্রসঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, এমপি বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামকে শহরে রূপান্তরের যে পরিকল্পনা নিয়েছেন সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জুড়ী ও বড়লেখায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।