তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের সম্রাট যুবলীগ নেতা আবুল বশর জিল্লু।

স্থানীয় সংসদ সদস্যের মানি ব্যাগ হিসাবে নিজেকে পরিচয়দেন বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে। এমপি’র নাম ব্যবহার করে অবৈধ ভাবে সম্পদের পাহাড় তৈরি করছেন ‘বালুখেকো’ আবুল বশর জিল্লু।

২০২২ সালে পতনউষা ইউনিয়নের শহিদনগর বাজারের রাস্তার কাজের অনিয়মের ছবি ও ভিডিও সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় সেই কাজে অনিয়মের মুলহুতা হিসাবে আবুল বশর জিল্লু নাম আসে।

মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের অর্থায়নে রহিমপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে রাস্তা কাজে অনিয়মের অভিযোগে প্রতিবাদ করে এলাকাবাসি এই আবুল বশর জিল্লু বিরুদ্ধে।

ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন ‘বালুখেকো’ আবুল বশর জিল্লু।

তার অবৈধ কাজে বাঁধা দিলেই বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত করে হায়রানি শুরু করেন।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর এলাকায় ধলাই নদীর তীরের কাছাকাছি অনেক পরিবারের বসবাস। মির্তৃঙ্গা সড়কে ধলাই নদীর ওপর নির্মিত স্টিলের ব্রিজের পূর্বদিকে ধলাই নদীর প্রথম খণ্ডাংশ ইজারা নিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলন আইন না মেনে অবৈধ ভাবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে ৩-৪ টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ‘বালুখেকো’ আবুল বশর জিল্লু।

আরও দেখা গেছে, নদীর বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙনে নদীর তীর ধীরে ধীরে বিলীন হচ্ছে। ফলে বেশ কয়েকটি বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। সেই সঙ্গে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে অতিরিক্ত শব্দ দূষণে দিশেহারা ধলাই নদীর আশপাশের তীরবর্তী বসতবাড়ির মানুষগুলো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ফলে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জনজীবনে দেখা দিচ্ছে মারাত্মক হুমকি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন মানছেন না ইজারাদাররা। আইন অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা থাকলে সে এলাকা থেকে সর্বনিম্ন এক কিলোমিটার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত সীমানার মধ্যে বালু উত্তোলন করতে হবে। অথচ আমাদের এলাকায় ব্রিজের এক কিলোমিটারের মধ্যেই অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে নদী তীরের বেশ কয়েকটি বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।

এমন কি অবৈধ বালু উত্তোলন পাশের রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসিয়েছেন ‘বালুখেকো’ আবুল বশর জিল্লু।

আবুল বশর জিল্লু সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়েছি এবং বড় অংকে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন অবৈধ বালু উত্তোলনের অলিখিত অনুমোদন দিয়েছে আমাকে।

কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার মো: রইছ আল রেজুয়ান এ বিষয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন মেনে ইজারাদারকে নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে হবে। রহিমপুরের অবৈধ ও অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version