গাইবান্ধা প্রতিনিধি :
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা মনোহরপুর ইউনিয়নের চাঞ্চল্যকর শিশু আব্দুল্লাহ ওরফে বায়েজিদ (৪) হত্যা মামলার অন্যতম সন্দেহভাজন আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে সিরিকুল ইসলাম (৫০) স্থানীয় জনতার হাতে গণধোলাইয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।
নিহত সাইফুল ইসলাম ওরফে সিরিকুল উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের বালুখোলা গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে। হত্যার শিকার চার বছরের শিশু আব্দুল্লাহ ওরফে বায়েজিদ একই গ্রামের তাহারুল ইসলাম ব্যাপারি ও রাহেনা বেগম দম্পতির ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাত আনুমানিক সারে ৭টার দিকে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের ঘোড়াবান্দা চৌরাস্তা বাজারে মুকুলের হোটেলে চা খেতে আসেন শিশু বায়োজিত হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান সন্দেহভাজন আসামি সিরিকুল। চায়ের দোকানে সিরিকুলের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বালুখোলা গ্রামের শতশত উত্তেজিত নারী-পুরুষ চায়ের দোকানের ভিতর থেকে তাকে টেনে-হেঁচড়ে বাহির করে আনেন। এরপর তারা যে যার মতো লাঠিসোঁটা দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত, কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে ঘটনাস্থলেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে সিরিকুলকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে রাত ১০ টার দিকে পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আইন নিজ হাতে তুলে নেয়ার অপরাধে এ পর্যন্ত স্থানীয় তিন জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শিশু বায়েজিদ হত্যার পিছনে এলাকাবাসী মূল অভিযুক্ত রোমানের পিতা সাইফুল ইসলাম ওরফে সিরিকুলকে সন্দেহ করে আসছিল। সে কারণে সন্দেহভাজন হিসেবে তাকেও পলাতক অবস্থায় (২৬ মে) বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জামিনে তিনি বেড়িয়ে আসেন।
এর আগে গত (৮ মে) বাড়ির সামনে খেলা করতে গিয়ে বালুখোলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী তাহারুল ইসলাম ব্যাপারির চার বছরের শিশু আব্দুল্লাহ ওরফে বায়েজিদ নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ৫ দিন পর ১৩ মে সন্ধ্যায় বালুখোলা গ্রামের ধানক্ষেত থেকে শিশু বায়েজিদের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুর মা রাহেনা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে তদন্ত চলাকালীন সময়ে পুলিশ সাইফুল ইসলাম ওরফে সিরিকুলের ছেলে রোমানের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জানতে পারেন, প্রবাসী তাহারুল ইসলাম ব্যাপারির ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ের সাথে তার বিয়ে না দেয়ার প্রতিশোধ হিসেবে শিশু বায়েজিদকে হত্যা করা হয়েছে।