রাশিয়ার এভিয়েশন এজেন্সি রোসাভিয়েতসিয়া বলেছে যে প্রিগোজিন, যিনি জুনে একটি বাতিল বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন বিধ্বস্ত বিমানটিতে থাকা ১০ জনের একজন। রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে যাচ্ছিল যখন তাভার অঞ্চলের কুজেনকিনো গ্রামের কাছে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে সবাই নিহত হন।
সেন্ট পিটার্সবুর্গে বেড়ে ওঠা প্রিগোজিনের। ১৯৮০-এর দশকে চুরি ও রাস্তায় ছিনতাইয়ের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ৯ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন প্রিগোজিন।
১৯৯০ সাল থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার পরিচয়। ক্রেমলিনের বিভিন্ন খাবারের চুক্তি পাওয়ার মাধ্যমে ধনকুবের হয়ে ওঠেন তিনি। একসময় তিনি ‘পুতিনের শেফ’ হিসেবে পরিচিত পান।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দোনবাসে রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের পর প্রিগোজিন একজন নির্মম সেনাপতি হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি গড়ে তুলেন ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ। এই বাহিনী ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে লড়াই করে। বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার স্বার্থের পক্ষে কাজ করেছে।
ওয়াগনার যোদ্ধারা সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, সুদান, লিবিয়া, মোজাম্বিক, ইউক্রেন ও সিরিয়াতে রয়েছে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সিএনএন। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি কুখ্যাতি অর্জন করেছেন। বিশেষ করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করার ক্ষেত্রে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর আলোচনায় চলে আসেন প্রিগোজিন। পূর্ব ইউক্রেনের সলেদার শহর দখলের রুশ অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন ওয়াগনার যোদ্ধারা। এটি বাখমুত থেকে কয়েক মাইল উত্তর-পূর্ব দিকে।
গত কয়েক মাস ধরে প্রিগোজিন রাশিয়ার সেনাবাহিনী, সেনাপ্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমালোচনা করে আসছেন। মে মাসে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন বাখমুত থেকে তার যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করা হবে। এর আগে কয়েক মাস ধরে পর্যাপ্ত গোলাবারুদ না পাওয়ার অভিযোগ করে আসছিলেন তিনি।
এখন তিনি ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরুর পরই তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রকাশ্যে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সমালোচনায় রুশ সরকারের অনেকেই ক্ষুব্ধ এবং তাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন।