বিশিষ্ট লেখক, সমাজসেবক ও সাবেক সংসদ সদস্য পান্না কায়সারের মরদেহ রোববার (৬ আগস্ট) মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।শনিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে পান্না কায়সারের মেয়ে অভিনেত্রী শমী কায়সার সময় সংবাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সর্বসাধারণের শ্রদ্ধার জন্য মরদেহ আজ বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয়েছে।দুপুর ১টা পর্যন্ত তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে রাজধানীর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এর আগে শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের সহধর্মিণী বরেণ্য লেখক ও অধ্যাপক পান্না কায়সার।
বরেণ্য লেখক এবং গবেষক শহীদজায়া অধ্যাপক পান্না কায়সারের মরদেহ শুক্রবার বাদ আসর নিউ ইস্কাটনের বাসার সামনে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
পান্না কায়সারের জন্ম ১৯৫০ সালের ২৫ মে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর করা এই শহীদ জায়া শিক্ষকতা করেছেন বেগম বদরুন্নেসা কলেজে। স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তাল সময়কালে শহীদুল্লাহ কায়সারের হাত ধরে শুরু করে তার প্রায় সাড়ে চার দশকের পথচলা।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শহীদুল্লাহ কায়সারকে তার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনী। এরপর তিনি আর ফেরেননি। এরপর থেকে পান্না কায়সার একা হাতে মানুষ করেছেন তার দুই সন্তান অভিনেত্রী শমী কায়সার এবং অমিতাভ কায়সারকে।
সংসার জীবনে আবদ্ধ না থেকে পান্না কায়সার দায়িত্ব নিয়েছেন লাখো কোটি শিশু-কিশোরকে সোনার মানুষে পরিণত করার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত দেশের বৃহত্তম শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’ এর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন ১৯৭৩ সালে। ১৯৯২ সাল থেকে সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন তিনি। ছিলেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতিও।
১৯৯৬-২০০১ সালের জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন পান্না কায়সার। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণা, গল্প-উপন্যাস মিলিয়ে বেশ কয়েকটি সাড়া জাগানো গ্রন্থের রচয়িতা তিনি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় অবদান রাখায় ২০২১ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।