আবু বকর ছিদ্দিক রনি, শার্শা প্রতিনিধিঃ
যশোরের শার্শা উপজেলা বাগআঁচড়া বাগুড়ী গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী রুবেল হোসেন গত ৩ই জুলাই সৌদি আরবে বাংলাদেশ সময় বেলা বারটার সময় মৃত্যু বরণ করেন।
মৃতদেহ বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২৬ জুলাই বুধবার দুপুর ২ টার সময় রুবেল হোসেনের কফিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিয়ে আসে রুবেলের স্বজনরা।
নিজ গ্রামে এলে মৃতদেহ দেখার পরে তৈরি হয় নানা ধূম্রজাল, মৃতদেহ টি দেখে রুবেল হোসেনের মা, বাবা ও পরিবারের কেউ চিনতে পারিনি যে এটা তাদের সন্তান। পরে অনেকটা ইচ্ছার বাহিরে মৃতদেহটি বুধবার রাত আট টার সময় বাগআঁচড়া সাধারণ কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহত রুবেল হোসেন শার্শা উপজেলা ৭নং কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ী দক্ষিণপাড়া গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, মাত্র এক বছর আগে পরিবারের সামান্য সুখের জন্য রুবেল হোসেন সৌদি আরবে যায়। সে ওখানে একটি মাদ্রাসায় পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু কুরবানী ঈদের কারনে দুই মাস ঐ মাদ্রাসা টি ছুটি হয়ে যায়।
ছুটির কারণে মাদ্রাসায় কাজ না থাকায় রুবেল হোসেনের একজন পরিচিত ব্যক্তির সাথে অন্য জায়গায় সেফটি ট্যাংক পরিষ্কার করার কাজে যাই। ওই সেফটি ট্যাংকে মধ্যে পড়ে রুবেল হোসেন অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তার সহযোগীরা সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্মরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রুবেল হোসেনের মা ময়না খাতুন বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যে মৃতদেহ টি আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এটি আমার ছেলের মৃতদেহ না। যাতে আমি আমার ছেলের মৃতদেহ দ্রুত পায় সেই ব্যবস্থা করা হোক।
অন্যদিকে যে মৃতদেহটি বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যানের মাধ্যমে মৃত রবেল হোসেনের ঠিকানায় পাঠানো হয়েছিল ঐ মরদেহটি কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার জবডল গ্রামের মৃত তয়েব আলীর ছেলে প্রবাসী মোজাম্মেল হক (৪৮)।
২৭শে জুলাই বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটার সময় যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার অনুমতিক্রমে কবর থেকে উত্তোলন করে স্থানীয় চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের মাধ্যমে মোজাম্মেলের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয় চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বলেন, কিশোরগঞ্জের সৌদি প্রবাসী মোজাম্মেলর লাশটি ভুলক্রমে আমাদের এলাকার মৃত সৌদি প্রবাসী রুবেলের ঠিকানায় চলে আসলে যথাযথ আইনি প্রকৃয়ার মাধ্যমে আমরা মোজ্জামেলের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি।
মোজ্জামেলের ভাইপো নাহিদ হাসান জানান, আমার চাচার লাশ ভুল ঠিকানায় চলে আসায় স্হানীয় প্রশাসন ও চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় লাশটি আমার কবর থেকে তুলে তার নিজ জন্মস্থানে নিয়ে যাচ্ছি।
তবে লাশ উত্তোলনের সময় প্রশাসনিক কোন কর্মকর্তাকে উপস্থিত হতে দেখা যায়নি।