সাম্প্রতিক সময়ে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে (সুইস ব্যাংক) উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে বাংলাদেশিদের আমানত। মাত্র এক বছরেই সুইস ব্যাংকগুলো থেকে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশিরা। ২০২১ সালে যেখানে বাংলাদেশি আমানত ছিলে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ, ২০২২ সালের শেষে তা কমে এসেছে মাত্র সাড়ে পাঁচ কোটি ফ্রাঁতে। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। এক বছরে এতো বিপুল পরিমাণ টাকা উত্তোলন করে বাংলাদেশিরা কী করেছে, তার কোনো ব্যাখ্যা নেই প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৫২ লাখ সুইস ফ্রাঁ। প্রতি ফ্রাঁ ১২১ টাকা হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকায় এটি দাঁড়ায় প্রায় ৬৬৮ কোটি টাকা। অথচ এক বছর আগে এই অঙ্ক ছিল ৮৭ কোটি ১১ লাখ ফ্রাঁ। অর্থাৎ এক বছরেই সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত কমেছে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। যার অর্থ ২০২২ সাল জুড়ে এই বিপুল অঙ্কের টাকা সুইস ব্যাংক থেকে তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশি আমানতকারীরা।
সারা বিশ্বের ধনীদের অর্থ, গোপনে গচ্ছিত রাখার জন্য বহুদিনের খ্যাতি সুইজারল্যান্ডের। কঠোরভাবে গ্রাহকদের নাম-পরিচয় গোপন রাখে সুইস ব্যাংকগুলো।
যে কারণে অবৈধ আয় আর কর ফাঁকি দিয়ে জমানো টাকা জমা রাখা হয় সুইস ব্যাংকে। নির্দিষ্ট গ্রাহকের তথ্য না দিলেও, এক দশক ধরে, বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক।
প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত সবচেয়ে বেশি ছিল ২০২১ সালে। এক বছরের ব্যবধানে এটি নেমে এসেছে সর্বনিম্ন অবস্থানে। এক বছরে ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের আমানত কমেছে প্রায় ৯৪ শতাংশ। প্রায় এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে যে আমানত বাড়লো; মাত্র এক বছরেই সেটি এতো কমলো কেন তার ব্যাখ্যা নেই প্রতিবেদনে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সুইজারল্যান্ডে গোপনীয়তা কমতে থাকায়, অনেক ধনী এখন অবৈধ টাকা জমা রাখার জন্য ঝুঁকছেন, লুক্সেমবার্গ, কেম্যান আইল্যান্ড, বৃটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড কিংবা বারমুডার মতো ট্যাক্স হ্যাভেনের দিকে।