উৎস নিয়ে মিশ্র বক্তব্য
নিউ সুপার মার্কেটে আগুন
রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ব্যবসায়ীরা। একদল বলছেন বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে।
অন্যপক্ষের প্রশ্ন, প্রতিটি মার্কেটে ভোর ৫টার সময়ই কেন আগুন লাগবে? এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে বলে ধারণা করছেন তারা। এদিকে অভিযোগের জবাবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, ফুটওভার ব্রিজ ভাঙার কাজের সঙ্গে আগুন লাগার কোনো যোগসূত্র নেই।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোর সাড়ে ৫টার সময় নিউ সুপার মার্কেটের তিন তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত।
প্রথমে নিউ সুপার মার্কেট ও পাশের নিউ মার্কেটের নিরাপত্তারক্ষীরা ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
কিন্তু তৃতীয় তলায় থাকা সেন্ট্রাল এসির লাইন দিয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তখন তারা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। পুরো নিউ সুপার মার্কেটে ১২শর বেশি দোকান রয়েছে বলেও তারা জানান।
আগুনে পুড়ে যাওয়া তিন দোকানের মালিক রবিউল মিয়া বলেন, আমাদের মার্কেটের সামনের ফুটওভার ব্রিজটি গত বছর ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু গত এক বছরে তারা এই ব্রিজটি ভাঙার জন্য আসেনি। ঈদের সময়ে তারা গতকাল ভোর রাতে এটি ভাঙতে আসে। আর তারা ব্রিজের সিঁড়ি ভাঙার জন্য ড্রিল মেশিন এনেছে কিন্তু জেনারেটর আনেনি। ফলে মার্কেট থেকে ড্রিল মেশিনে বৈদ্যুতিক লাইন দিলে সেখান থেকে আগুন লাগে।
নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি ড. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন বলেন, মার্কেটের সিকিউরিটি ইনচার্জ নাজমুল ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের সময় আমাকে খবর দেন যে আমাদের পাশের মার্কেটে আগুন লেগেছে। একটা খবর শুনতে পেয়েছি যে, রাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের লোকজন মার্কেটের সামনের ফুটওভার ব্রিজ ভাঙছিলেন। ভাঙার কাজ শুরুর পর ওদের মার্কেটে একটা ফ্লাশ হয়েছে। তখন মার্কেটের সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গেই ১১ হাজার ভোল্টের সুইচ গিয়ার বন্ধ করে দেন। তার ভাষ্যমতে, সে যদি ওটা বন্ধ না করতেন তাহলে ওদের বি-ব্লক পুড়ে যেত। তারপরও আগুন লাগে। তখন ওদের সেন্ট্রাল এসির জন্য যে ফলস সিলিং ছিল, সেটার মধ্যে থাকা তার দিয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে অন্য আরেক দোকানি বলেন, আগের কয়েকটি মার্কেটে লাগা আগুনের সময়ের সঙ্গে এটার সময়ের মিল রয়েছে। আমার প্রশ্ন-এত সময় থাকতে ৫টার সময়ই কেন আগুন লাগবে? এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে।
রাজিব হোসেন নামে নিউ মার্কেটের এক কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, একটা পক্ষ চাচ্ছে ব্যবসায়ীদের ধ্বংস করে দিতে। কারণ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে সরকার বিপাকে পড়বে।
এদিকে ব্যবসায়ীদের দাবির কয়েক ঘণ্টা পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এক বিবৃতিতে বলেছে, আগুনের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের কাজের সম্পর্ক নেই। কারণ হিসাবে তারা বলেছে, নিউ মার্কেটসংলগ্ন একটি পথচারী পারাপার সেতুর সঙ্গে নিউ সুপার মার্কেটের সংযোগ দাপ্তরিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আগুন লাগার আধা ঘণ্টারও আগে তাদের কাজ শেষ হয়।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আরও বলেছে, সেতু বিচ্ছিন্নকরণের স্থান থেকে ৪০০ ফুটেরও বেশি দূরত্বে আগুন লেগেছে এবং সেতু বিচ্ছিন্নকরণের কাজে গ্যাস কাটার ব্যবহার করা হয়নি।
যুগান্তরের প্রতিবেদন