মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

অফিসেই মাদক সেবন করেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু

যা যা মিস করেছেন

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু তাঁর সরকারি অফিস কক্ষেই নাকি নিয়মিত মাদক সেবন করতেন, করাতেন-এমন অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল অনেক দিন থেকেই। এবার সেই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে হাতে আসা একটি ভিডিও থেকে। ওই ভিডিওতে মিরু এলাকার এক চিহ্নত মাদক ব্যবসায়ীর কাছে ফেন্সিডিলের বোতল তুলে নেয়ার দৃশ্য দেখা গেছে।
জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলার পরিষদের নতুন ভবনের নিচ তলায় তার অফিস কক্ষ। ওই ভবনেই বসেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ অন্য দপ্তরের কর্মকর্তারা। ফেন্সিডিলের মতো মাদক নিয়ে নির্দিষ্ট সরবরাহকারী সরাসরি ওই ভবনে থাকা ভাইস চেয়ারম্যানের কক্ষে গিয়ে তাঁর হাতে মাদক তুলে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই কক্ষে ভাইস চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ট মাদকাসক্তদেরও কেউ কেউ মাদক সেবন করে থাকেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
মোবাইলে ধারণ করা দুই মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, আনোয়ার হোসেন মিরু নিজের চেয়ার থেকে উঠে টয়লেটে প্রবেশ করেন। টেবিলের অন্যপ্রান্তে তখন একজন পুরুষ ও একজন নারী বসে আছেন। টয়লেট থেকে বের হয়ে তিনি সোজা চলে আসেন টেবিল থেকে কিছুটা দূরে দর্শনার্থীদের জন্য থাকা সোফার কাছে, সেখানে বসা লুঙ্গি পরিহিত একলোকের সামনে। কিছু সময় পর লুঙ্গির ভাঁজে লুকিয়ে রাখা একটি ফেন্সিডিলের বোতল মিরুর হাতে তুলে দেন। মিরু কিছুটা আড়াল করে সেই বোতল নিয়ে আবারও ঢুকে পড়েন টয়লেটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাইস চেয়ারম্যান মিরুকে যিনি ফেন্সিডিলের বোতল দিয়েছেন তিনি উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া এলাকার কানিপাড়া গ্রামের জাফর আলীর ছেলে ইউসুফ (৪২)। যার নামে একাধিক মাদক মামলা রয়েছেন বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাদক কারবারি বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান মিরু প্রায় সময় ফেন্সিডিলের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। ফ্রিতে ফেন্সিডিল না দিলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়।
তবে মাদককারবারী ইউসুফ এই প্রবিবেদকের কাছে মুঠোফোনে দাবি করে বলেন, আমার নামে শুধু ১ টা মাদক মামলা রয়েছে। সেই সাথে সাংবাদিকদের কাছে আসা ভিডিও ফুটেজ সম্পর্কে বলেন, ‘আমি ভাইচ চেয়ারম্যান মিরুর কাছে টাকা পাই। সেই টাকা আনতে গিয়েছিলাম। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে আপনি অনেকটা লুকিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান মিরুর হাতে ফেন্সিডিল তুলে দিচ্ছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, না, ওনি আমার কাছে সিগারেট খাওয়ার জন্য ৫০ টাকা নিয়েছিলেন।
এদিকে সরকারি অফিসে বসে মাদক ক্রয় এবং সেবনের বিষয়ে জানতে চাইলে হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যন আনোয়ার হোসেন মিরু সাংবাদিকদের বলেন, না আমি মাদক নেইনি। ইউসুফ নামে এক মাদক ব্যবসায়ী আপনাকে অফিসে ফেন্সিডিল দিয়েছেন সেই ঘটনার ভিডিও আমাদের সাংবাদিকদেও কাছে আছে? এমন প্রশ্নে মিরু বলেন, না। ও (ইউসুফ) আমার কাছে টাকা পায়। সেই টাকার জন্য সে আমার কাছে এসেছিল।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজির হোসেন বলেন, মাদক সেবন এমনিতেই অপরাধ। আর সেটা যদি অফিস কক্ষে বসে মাদক সেবন করা হয় সেটা আরও বেশি অপরাধ। যেহেতু ভাইস চেয়ারম্যানরা উপজেলা চেয়ারম্যানের তত্বাবধানে সেহেতু তার অপরাধ প্রমাণ হলে উপজেলা চেয়ারম্যান ব্যবস্থা নিবেন।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন বলেন, যদি সত্যি তিনি অফিসে বসে মাদক সেবন করেন। তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security