আমির আলী অভয়নগর (যশোর), যশোরের অভয়নগরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই শীত অনুভূত হচ্ছে। পাশাপাশি হিমেল হাওয়ার সঙ্গে কুয়াশাও ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে গ্রাম থেকে শহরে জেঁকে বসেছে শীত। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যশোর জেলায় শেষ রাত থেকে শুরু করে ভোর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার সৃষ্টি হচ্ছে। বেলা বাড়লে মাত্রা অনেকটা কমে আসলেও হালকা কুয়াশা চোখে পড়ছে। এছাড়া বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্য উঁকি দিলেও তাপ ছড়াচ্ছে না। ঠান্ডার দাপটের কাছে যেন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে সূর্যটাও।
যশোরের স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার যশোরে সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিন যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যশোরে হঠাৎ করেই তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। এই তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, নওগাঁ, পঞ্চগড়, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। আর অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
এদিকে কাঁপন ধরানো ঠান্ডায় মানুষের পাশাপাশি প্রাণীকূলেরও জবুথবু অবস্থা। হঠাৎ শীতে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিও নাকাল হয়ে পড়ছে।
শীতের কষ্টে পড়েছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। জীবন জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করে তাদের রুটি-রুজির সন্ধানে ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে। ঠান্ডার মধ্যে ভোরের আলো ফোটার আগেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পড়ছেন তারা। আর শহরের চাইতে গ্রামের দিকে শীতের তীব্রতা বেশি। গ্রাম এলাকায় হিমেল হাওয়া ও কুয়াশাও বেশি পড়ছে। সঙ্গত কারণে তাপমাত্রাও গ্রামের দিকে কিছুটা কম।
যশোর অভয়নগরের রাজঘাট এলাকার ভ্যানচালক মনির হোসেন জানান, হঠাৎ করেই শীত বেড়ে গেছে। সকালে ও রাতে জোরে ভ্যান চালালে শরীরে বাতাস সূচের মতো ফুটছে। হাত পা অবসের মতো হয়ে যাচ্ছে।
স্টেশনের বারান্দায় শুয়ে থাকা অসহায় মানুষের কাঁপতে থাকা আহাজারি থেকে জানা য়ায় খলিল মিয়া জানালেন, ‘বাবা খুব কষ্ট হচ্ছে। অন্যবার সরকার কম্বল দেয়, বড় লোকরা ল্যাপ-কম্বল-পুরনো জামা কাপড় দেয়। এ বছর এখনও কিছু পাইনি।’ শীতের তীব্রতায় ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছে শিশু ও বৃদ্ধরা। গ্রামাঞ্চলের নিম্নবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষেরা জানান, শীতের তীব্রতা ও গরম কাপড়ের অভাবে কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটছে। সঠিক সময়ে কাজে যেতে পারছেন না তারা। তাই শীতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ।