মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

চীনে ফিরতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

যা যা মিস করেছেন

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দুদিনের সফরে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, ৬ আগস্ট চীনা মন্ত্রীর ঢাকা সফর শুরু হবে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে আশার আলো দেখছেন বাংলাদেশে আটকে পড়া শিক্ষার্থীরা।
গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে ও শীতকালীন অবকাশের জন্য ছয় হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবং ব্যক্তি উদ্যোগে দেশে ফিরে আসে। আড়াই বছর পার হলেও আর চীনে ফিরে যাওয়া হয়নি তাদের। ফলে একাডেমিক কার্যক্রম ক্ষতির মুখে পড়ছে শিক্ষার্থীদের।
সোমবার (২৫ জুলাই) বাংলাদেশে চীনা দূতাবাস সূত্রে জানানো হয়, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কর্মী বিনিময় আরও সহজতর করার জন্য, দেশটির সিভিল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সম্প্রতি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে ঢাকা-কুনমিং ও ঢাকা-গুয়াংজু রুট খোলার অনুমোদন দিয়েছে।
আরও বলা হয়, চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স ও চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স দ্বারা পরিচালিত বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট জুলাই থেকে প্রতি মাসে এক থেকে দুইটি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের ওয়েবসাইটে কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন চীনের মূল ভূখণ্ডে বাংলাদেশ থেকে কোন কোন ক্যাটাগরিতে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে তার তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত তথ্যে শিক্ষার্থীদের ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে কিছু বলা হয়নি। যার ফলে, চীনফেরত শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র মানসিক চাপ, হতাশা কাজ করছে।
যদিও সোমবার (২০ জুন) ঢাকায় চীনা দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ‘রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এক মিনিট’ শীর্ষক এক বার্তায় জানানো হয়, দীর্ঘদিন করোনা মহামারিতে বন্ধ থাকার পরে করোনা পরিস্থিতি উন্নত হওয়ায় ফের বিদেশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছে চীন। এ প্রক্রিয়ায় প্রথম ধাপেই চীনে ফেরার অনুমতি পাচ্ছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সফর উপলক্ষে বাংলাদেশে অবস্থানরত চীনফেরত শিক্ষার্থীদের মাঝে আশার আলো জাগিয়েছে। তারা মনে করে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষার্থী ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যপারে ফলপ্রসূ দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হবে। সরকার যদি আন্তরিক হয় তাহলে পরের সেমিস্টারের মধ্যে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে স্বাভাবিক পড়াশোনার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারবে।
চীনকে বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র উল্লেখ করে,চায়না ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার রিসোর্সেস এন্ড হাইড্রোপাওয়ার রিসার্চ, বেইজিংয়ে মাস্টার অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্রেড-১ স্কলারশীপে অধ্যয়নরত মো. রাসেল আহম্মেদ বলেন, অতীতে চীন সবসময় বাংলাদেশের প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের সময় সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে জোর দাবি জানালে, চীনে পড়ুয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য চীন সরকার একটা আশানুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমি আশাবাদী।
তিনি বলেন, চীন উচ্চ শিক্ষার জন্য একটি স্বাচ্ছন্দ্যময় দেশ। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বহু শিক্ষার্থী স্কলারশিপে চীনে পড়াশোনা করতে যায়। তারা চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে সুনামের সঙ্গে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ২০২০ সালের পর থেকে চীন সরকার তাদের জিরো কোভিড পলিসি নীতির কারণে ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের জন্য বর্ডার বন্ধ রেখেছে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখেছে। যেটা প্রকৃতপক্ষে ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের এডুকেশন লাইফে অনেকটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
চীনের বেইবু গল্ফ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত মোঃ রাজিবুল ইসলাম, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলেন, ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করলে প্রায় ৬ হাজারের মতো শিক্ষার্থী বাংলাদেশে ফিরে আসে। গত প্রায় আড়াই বছর কেটে গেলেও আজ পর্যন্ত আমাদের ফিরে যাওয়া হয়নি। আমাদের ফিরে যাওয়ার জন্য কোনো পদক্ষেপও নেওয়া হয়নি। ২০২০ সালের পর থেকে চীন সরকার তাদের জিরো কোভিড পলিসি নীতির কারণে ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের জন্য বর্ডার বন্ধ রেখেছে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখেছে। অনলাইন পাঠদান শেখার জন্য পর্যাপ্ত না হওয়ায় আমরা পড়ালেখায় অনেক পিছিয়ে পড়েছি। এরই মধ্যে রাশিয়া, পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশের ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীরা চীনে ফিরে গেছেন। তাই চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জোরালোভাবে আলোচনা করে দ্রুত চীনে ফিরে নেওয়ার ব্যবস্থা করার জোড় দাবি জানান।
তৃতীয় ডোজ সিনোফার্মার ভ্যাকসিন নিয়েও চীনে আসতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেছেন চীনের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।তারা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে সাধুবাদ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা চান, যেভাবেই হোক পরবর্তী সেমিস্টারের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে।
বাংলাদেশ চীনা দূতাবাস বলছে, চীনে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের দ্রুত ফেরত পাঠাবে তবে নির্দিষ্টভাবে এখনও কিছু জানাচ্ছে না। আমাদের প্রথম নির্দেশনা ছিলো, চীনে যেতে হলে সিনোফার্মার ভ্যাকসিন নিতে হবে কিন্তু তৃতীয় ডোজ শেষ করেও আজও যেতে পারলাম না।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, তৃতীয় ডোজ সিনোফার্মার ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও চীনে গিয়ে আমাদের ১৪ থেকে ২১ দিনের কোয়ারেন্টাইন থাকতে হবে যেটা অত্যন্ত ব্যয়বহুল, পাশাপাশি ফ্লাইট কম থাকায় বিমানের টিকিটের দামও অত্যন্ত ব্যয়বহুল যেটা বহন করা আমাদের কাছে অত্যন্ত কষ্টকর।
‘আমরা চাই ভিসা প্রসেসিং, কোয়ারেন্টাইন খরচ এবং ফ্লাইট টিকিট খরচ কমানো হোক। নির্দিষ্টভাবে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জোরালোভাবে আলোচনা করে দ্রুত আমাদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করুক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে স্বাভাবিক পড়াশোনার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চাই।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security