কদিন আগেও মঈন আলি, আদিল রশিদের সতীর্থ এবং অধিনায়ক ছিলেন ইয়ন মরগান। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক। অবসরের পর মরগান যোগ দিয়েছেন স্কাই স্পোর্টসের ধারাভাষ্য প্যানেলে। নতুন ভূমিকায় সাবেক দুই সতীর্থ মঈন-আদিলকে নিয়ে ব্যতিক্রমী আড্ডায় মেতেছিলেন মরগান।দুই মুসলিম ক্রিকেটারের কাছে তার জানতে চাওয়ার বিষয় ছিল ইসলাম ও হজ্ব । মঈন-আদিল সবিস্তারেই হজ্বের গুরুত্ব ও সৌন্দর্য তুলে ধরেছেন মরগানের নেওয়া সাক্ষাৎকারে।
পরিবারসহ হজ্ব পালন শেষে ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের দলে যোগ দিয়েছেন লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। মঈনও হজ্ব পালন করেছেন কয়েক বছর আগে।
স্কাই স্পোর্টসের আয়োজনে মরগান সাক্ষাৎকারের শুরুতে বলেন, ‘মঈন, আদিল তোমাদের পেয়ে ভালো লাগছে। আজ আমরা তোমাদের বিশ্বাস নিয়ে কথা বলব, যা দারুণ কিছু। আদিল, সম্প্রতি তোমার পরিবার হজ্ব পালন করে এসেছে। মঈন ১২-১৩ বছর আগে হজ্ব করেছে। মঈন, তোমার ও তোমার পরিবারের কাছে বিশ্বাস মানে কী?’
বাঁহাতি অলরাউন্ডার মঈন উত্তরে বলেন, ‘ইসলাম আমাদের কাছে ক্রিকেট বা অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে এগিয়ে। হজ্ব ইসলামের পাঁচ মূল স্তম্ভের একটি। ক্রিকেটার হিসেবে আমরা অনেকের রোল মডেল হতে পারি। ইসলামে আমাদের রোল মডেল রাসুলগণ। নবী ইবরাহিমের (আ.) ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা হজ্ব পালন করি। মক্কা আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র শহর। প্রচুর মানুষ হজ্ব পালন করতে যান। ইসলামে হজ্ব অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’
হজ্বে কোনো ধরনের বৈষম্য থাকে না। ধনী-গরিব, শ্রেণিবিভাগ, সঙ্গ ত্যাগ ও ধৈর্যের শিক্ষা পাওয়া যায়। ২১ বছর বয়সে হজ্ব পালন করা মঈনের আহ্বান, সামর্থ্যবান মুসলিমরা হজ্ব পালনে যেন বিলম্ব না করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলিম একইরকম কাপড় পড়ে হজ্বে যান, এতে ধনী-গরিবের কোনো পার্থক্য থাকে না। আমি যেবার হজে যাই, সেবার ৩-৪ মিলিয়ন মানুষ গিয়েছিলেন। করোনার কারণে এখন মানুষের সংখ্যা কমেছে, তবুও এবার অনেক মানুষ হজ্বে গিয়েছিল। এটা পালন করা কঠিন কাজ, মোটেও সহজ নয়। ত্যাগ, ধৈর্য শেখার পাশাপাশি মানুষ হিসেবে আপনাকে বদলে দেবে। বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে হজ্ব হয়, তাই আপনাকে নির্ধারিত সময়েই যেতে হবে। জীবনে কখন কী হয় আমরা বলতে পারি না। তাই সুযোগ থাকলে তাড়াতাড়ি হজ্ব করা উচিত। এটা আজীবন মনে রাখার মতো এক অভিজ্ঞতা।’এবার হজ্ব পালনের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে আদিল বলেন, ‘এটা দারুণ এক অভিজ্ঞতা। শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক যোগ্যতা থাকলে হজ্ব আপনাকে পালন করতেই হবে। ইয়র্কশায়ার ও ইসিবি আমার হজ্ব পালনের পথ সহজ করে দিয়েছে। খুব সহজেই আমার হজে যাওয়ার ছুটি মঞ্জুর করেছে। তুমি তখন অধিনায়ক ছিলে, তোমার সঙ্গেও (মরগান) কথা বলেছি। হজ অনেক কিছু শিখিয়েছে। অনেক মানুষের সাথে থেকে ধৈর্য ও ত্যাগের পাশাপাশি অনেক কিছু শেখা যায়। হজ্ব শেষ করে দলে ফিরে ভালো লাগছে।’