টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ নিজের দুই ছেলেকে হত্যা করে চলন্ত ফ্যানের মধ্যে মাথা দিয়ে মা সাদিয়া বেগম নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার।
রোববার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে সাড়ে ৩টায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
দুপুর ১২টার দিকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের পুনর্বাসন এলাকা থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এসময় গুরুতর আহত অবস্থায় শিশু দুটির মাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মৃত ওই দুই শিশুর নাম সাজিম (৬) ও দেড় বছরের সানি। তারা উপজেলা নিকরাইল ইউনিয়নের এক নম্বর পুর্নবাসন এলাকার ইউসুফ মিয়ার ছেলে।
প্রথমে সবাই ধারণা করেছিলেন ঘরের ভেতর ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় চলন্ত ফ্যানের পাখা তাদের ওপর ছিঁড়ে পড়ে মৃত্যু হয় এবং তাদের মা সাদিয়া আহত হন।
ওই দুই শিশুর নানী সূর্য বেগম জানান, তার মেয়ের জামাই তাদের এখানেই থেকে মাছ শিকার সংসার চালান। রোববার ভোরে তিনি মাছ ধরার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। অনেক বেলা হলেও তার মেয়ে এবং নাতিদের কোনো সড়া না পেয়ে ডাকাডাকি করতে থাকেন। পরে তিনি তার মেয়ের জামাইকে ফোন করে বিষয়টি জানান। মেয়ের জামাই এসে টিনের বেড়া কেটে ঘরে ঢুকে দুই নাতির মরদেহ এবং তার মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। পরে আহত অবস্থায় তার মেয়েকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, সাদিয়া বেগমের তিন নম্বর স্বামী ইউসুফ মিয়া এবং সাদিয়া ইউসুফের দ্বিতীয় স্ত্রী।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, সাদিয়া দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহের জেরে ভুগছিলেন। সাদিয়ার ধারণা ছিল ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রী তার দুই ছেলেকে হত্যা করতে পারে। এ কারণে তিনি নিজেই ভোরে দুই ছেলেকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন। এরপর চলন্ত ফ্যানের মধ্যে মাথা দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সাদিয়া। বর্তমানে সাদিয়া টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সাদিয়া দুই ছেলেকে হত্যার কথা তাদের পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।