স্টাফ রিপোর্টার:
পরিবারিবারি সহিংসতা, মারামারি এবং ছোটখাটো চুরির অভিযোগে আছে এমন ৫০ মামলায় ৭০ জনকে শিশুকে নয়টি শর্তে মুক্তি দিয়েছেন আদালত।কারাগারে নয়, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আর ফুল হাতে দিয়ে ৭০ জন শিশু অভিযুক্তকে বাবা মায়ের কাছে ফেরৎ পাঠালেন আদালত।গতকাল দুপুরে ৯ শর্তে ৫০ মামলায় এসব শিশুদের বাবা-মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়।
একসঙ্গে অর্ধশত মামলার রায় দিতে গিয়ে এমন নজির স্থাপন করলেন সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জাকির হোসেন।জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে এমন রায় বলেও জানান আদালত, এই রায়ে শিশুদের জীবনে সংশোধনের সুযোগ তৈরী হওয়ায় খুশি আইনজীবী ও অভিভাবকরাও। গতকাল দুপুরে আদালত প্রত্যেকের হাতে জাতীয় পতাকা তোলে দিয়ে বলেন এই পতাকা বুকে ধারণ করতে হবে, দেশকে সাজাবে তোমরা। দীর্ঘদিন এই মামলাগুলো চলে আসায় পড়াশোনাসহ সুন্দর ভবিষ্যতের পথ থেকে ছিটকে পরেছিলো শিশুরা।
জানা যায়, কোমলমতি এসব শিশুদেরকে পরিবারের অন্যদের সাথে মামলায় জড়ানো হয়েছিল, মারামারি এবং ছোট খাট কিছু চুরির অভিযোগ আনা হয়েছিল। ক্ষুদ্র একটি অভিযোগ এসব শিশুদের আদালতে হাজিরা দিতে হত। এর ফলে শিশুদের ভবিষ্যত এক অনিশ্চিয়তার মধ্যে নিপতিত হয়। তাদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয়। স্বাভাবিক জীবনে শিশুদের বেড়ে ওঠা হুমকির সম্মুখীন হয়।
শিশুদের ৯ শর্তগুলো হলো- নিয়মিত পড়াশুনার পাশাপাশি প্রতিদিন কিছু ভালো কাজ করা এবং ডায়েরিতে তা লিখে রাখা, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা, সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, বাবা-মাসহ গুরুজনদের আদেশ মেনে চলা এবং বাবা-মায়ের সেবাযত্ন ও কাজে সাহায্য করা, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা এবং নামাজ আদায় করা, প্রত্যেককে কমপক্ষে ২০টি করে গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করা, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা, মাদক থেকে দূরে থাকাসহ ভবিষ্যতে কোনো অপরাধের সঙ্গে নিজেকে না জড়ানো।
এসব শর্ত পালন হচ্ছে কিনা তা আগামী এক বছর একজন প্রবেশন কর্মকর্তা পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর আদালতকে অবহিত করবেন।
আপনি যা যা মিস করেছেন
Add A Comment