মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

কর্মসূচি শুরু আজ, ফ্যামিলি কার্ড পেলেন যারা

যা যা মিস করেছেন

আজ রোববার থেকে শুরু হচ্ছে টিসিবির ‘ফ্যামিলি কার্ড’ কর্মসূচি। স্বল্পমূল্যে এক কোটি পরিবারের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণের জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। দেশব্যাপী টিসিবির ৩১শ ডিলারের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের দোরগোড়ায় এ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রতি কার্ডের বিপরীতে দেওয়া হবে সয়াবিন তেল, চিনি ও মসুর ডাল। কর্মসূচির আওতায় আজ থেকে প্রথম এবং রোজার শুরুতে দ্বিতীয় দফা পণ্য দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট উপকারভোগী তার ইউনিয়ন বা উপজেলার টিসিবির ডিলারের কাছ থেকে কার্ড দেখিয়ে পণ্য গ্রহণ করতে পারবেন। আর ডিলাররা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে বিতরণের লক্ষ্যে পণ্য নিয়ে আসবেন। টিসিবির সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।আজ সারা দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন বাণিজ্য সচিব (সিনিয়র) তপন কান্তি ঘোষ। সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ-ফতুল্লা-পোস্তগলা রোডে, পঞ্চবটি (সাবেক পথকলি স্কুল) শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১১টায় ফতুল্লা স্টেশন রোডের হক স্টিল মিল থেকে এর কার্যক্রম শুরু হবে।

সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৮ মার্চ থেকে টিসিবির পণ্য চাহিদামাফিক জেলাগুলোয় পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি জেলায় খাদ্য অধিদফতর, বিএডিসি ও টিসিবির নির্ধারিত গুদামে মজুত করা হয়েছে এসব পণ্য। সেখানে সম্পন্ন করা হয়েছে পণ্যের প্যাকেজিং কাজ। এরপর জেলা প্রশাসন থেকে পণ্যগুলো ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে টিসিবির ডিলারদের।

ফ্যামিলি কার্ড কর্মসূচি প্রসঙ্গে টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান বলেন, করোনাকালে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নগদ সহায়তা দিতে তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। সেখান থেকে ৩০ লাখ পরিবার এ বিশেষ কার্ড পাচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ৫৭ লাখ ১০ হাজার পরিবারকে কার্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকা ও বরিশাল শহর ছাড়া দেশের ৮৭ লাখ ১০ হাজার পরিবারকে এ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। তবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ১২ লাখ ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে ৯০ হাজার পরিবার ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে এই সুবিধা পাবে। তারা ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় থাকবে না বা ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে না। সব মিলে এক কোটি পরিবার কার্ড পাচ্ছে।

আজ রোববার থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রথমপর্বে একজন ফ্যামিলি কার্ডধারী পাবেন ২ লিটার সয়াবিন তেল, প্রতি লিটারের দাম পড়বে ১১০ টাকা। এছাড়া দুই কেজি চিনি ও দুই কেজি মসুর ডালও দেওয়া হবে। প্রতি কেজি চিনির মূল্য হবে ৫৫ টাকা ও মসুর ডাল ৬৫ টাকা। এছাড়া ৩ এপ্রিল অর্থাৎ পহেলা রমজান থেকে দ্বিতীয় দফায় সাশ্রয়ী মূল্যে উল্লিখিত তিন পণ্যের সঙ্গে আরও দুই কেজি ছোলা যুক্ত করে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ছোলার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা।

যারা সরকারের ২৩ ধরনের ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন না, কেবল তাদেরই টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী করা হয়েছে। উপকারভোগী নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনসংখ্যা, দারিদ্র্যের সূচক বিবেচনা করা হয়েছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসন সম্পৃক্ত থাকছে। সুষ্ঠুভাবে বিক্রির লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কার্যক্রম তদারকির জন্য ট্যাগ অফিসার নিয়োগসহ সংশ্লিষ্ট কমিটি স্থানীয় প্রশাসন থেকে গঠন করা হয়েছে।টিসিবির এই কর্মসূচি কতটা বাজারে প্রভাব পড়বে জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলদেশ (ক্যাব) সভাপতি গোলাম হোসেন বলেন, টিসিবি এক কোটি পরিবারকে সাশ্রয়ীমূল্যে পণ্য দেবে। এর অর্থ উপকৃত হবে ৫ কোটি মানুষ। অর্থাৎ প্রতি পরিবারে ৫ জন থাকছে। এখন প্রশ্ন-স্থানীয় বাজার থেকে কিনে এ পণ্য বিতরণ করলে সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নতি হবে না। যদি দেশের বাইরের উৎস থেকে এনে পণ্য দেওয়া হয় তবে সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। বাজারে মূল্যের ওপর প্রভাব পড়বে। তবে এটি ভালো উদ্যোগ। এ কার্যক্রম আরও জোরদার করতে পারলে ভালো হবে।টিসিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। যেসব অঞ্চলে টিসিবির ডিলার কম, অন্য উপজেলা থেকে ডিলার এনে সংকটপূর্ণ এলাকার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। তবে পণ্য নিতে এসে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারবে না এবার। কারণ যারা কার্ডধারী, শুধু তারাই পণ্য পাবেন। সংশ্লিষ্ট ডিলার ও ক্রেতার কাছে একটি করে কার্ড থাকবে। পণ্য দেওয়ার পর ক্রেতার ওই কার্ডে লিখে দেবে আমি পণ্য বুঝিয়ে দিলাম। ক্রেতা টিসিবির ডিলারের কার্ডে লিখে দেবেন, ‘আমি পণ্য বুঝিয়ে পাইলাম’। সর্বশেষ প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জামালপুর সদরের টিসিবির ডিলার মেসার্স তানিন এন্টারপ্রাইজের আব্দুল কাদের বলেন, আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এখন পর্যন্ত পণ্য হাতে বুঝে পাইনি। আশা করছি আগামীকাল পণ্য হাতে পাব। এরপর কার্যক্রম পরিচালনা করব ফ্যামিলি কার্ডের। অপর ডিলার ঝালকাঠির কীর্ত্তিপাশার মেসার্স নেকী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বিলকিস জাহান বলেন, এই কর্মসূচি পরিচালনার জন্য ডিলারদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। রোববার থেকে কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। এখানে ২৫ জন ডিলার আছে। তাদের অধীনে কার্ডধারী ১৫ হাজার ৮০৮ জন। রোস্টার অনুযায়ী আমি এখনো পণ্য পাইনি। তবে নির্ধারিত সময়ে পাওয়া যাবে। অন্যান্য ডিলার হয়তো প্রথম দিনেই শুরু করতে পারবে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security