শনিবার, মার্চ ১৬, ২০২৪

Sample Page Title

যা যা মিস করেছেন

সমাজের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের আশ্রয়স্থল এবং ভরসার জায়গা তিনি। নারী শক্তির প্রতীক আর আত্মশক্তিতে বলীয়ান এই নারী ব্যক্তিত্ব আর কেউ নয়। তিনি হলেন নেত্রকোণার বেগম রোকেয়া। তবে স্থানীয়রা তাকে চিনেন মাস্তরা আপা হিসাবেই। জীবন সংগ্রামী এই মহিয়সী নারী জীবনের ভাঙা-গড়ায় নিজের অস্তিত্বকে বিলীন হতে দেননি। অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র নারী শক্তিকে একত্রিত করে তিনি গড়ে তুলেছেন এক বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। নাম ‘স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতি’। নারীর সামাজিক-অর্থনৈতিক মুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সবার জন্য শিক্ষা ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করে যাচ্ছে এ সমিতি।

১৯৪৮ সালের ১৭ মে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের কাউরাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম রোকেয়া। তার পিতা আব্দুল আজিজ তালুকদার। মাতা রায়হানা বেগম।

মধ্যবিত্ত পরিবারের মাস্তরা ছিলেন পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে বড়। ১৫ বছর বয়সে ৭ম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে তার। কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি হন দু’কন্যা সন্তানের জননী। এর এক পর্যায়ে স্বামী সংসারে দেখা দেয় গরমিল। তিনি নবজাতক এক শিশু নিয়ে ফিরে যান বাবার বাড়ি। তারপর সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে তিনি ১৯৬৬ সালে নতুন উদ্দীপনায় আবার শুরু করেন পড়াশোনা। তার সাথে নিজের মেয়েকে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তোলা। তিনি এসএসসি, এইচএসসি, বিএ ও বিএড পাশ করেন।

পরে ১৯৬৯ সালে নেত্রকোণা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। শিক্ষকতার ফাঁকে সুযোগ পেলেই যুক্ত হন সামাজিক কার্যক্রমের সাথে। তিনি নারী শক্তির বিকাশ, নারী নির্যাতন রোধের জন্য কাজ করতেন। ১৯৭০ সালে নারী অধিকার রক্ষণাবেক্ষণের কথা ভেবে মহিলা পরিষদে যোগ দেন তিনি। এখানে যথাক্রমে সেক্রেটারী ও সভাপতির পদ দায়িত্ব পালন করেন। মাস্তরা বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থার সেক্রেটারিও  হয়েছেন ১৯৭৮ সালে।

মানুষের কল্যানে ১৯৮৫ সালে তিনি কয়েকজনকে নিয়ে গড়ে তুলেন ‘স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতি’। সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর থেকে ১৯৮৬ সালে করা হয় এর রেজিষ্ট্রেশন। প্রথমে নারীদের উন্নয়নে নিজের বাড়িতে শুরু করেন স্বাবলম্বী’র কাজ। পরে সমাজসেবার এক ছোট অনুদানের মাধ্যমে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলেন হস্ত শিল্প-কারখানা। এরই মাঝে স্বউদ্যোগে তিনি এখানে চালু করেন গরীব, অসহায় ছেলে-মেয়েদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা কর্মসূচি।
স্বাবলম্বী’র কার্যক্রমকে সম্প্রসারিত করতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন কর্মসূচি চালানোর জন্য কেয়ার, ইউনিসেফ জেআইজেডসহ বেশকিছু দাতা সংস্থা থেকে ফান্ডও পেতে থাকেন তিনি। ১৯৯০ সালে তিনি সরকারি শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্বাবলম্বীতে আরো বেশি মনোযো হন। তিনি এখন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে স্বাবলম্বীতে কযেকটি বিদেশি সংস্থার অর্থায়নে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্প চলছে। স্বাবলম্বীর আছে ২২টি ব্রাঞ্চ অফিস।

স্বাবলম্বী’র প্রধান কার্যালয় হলো নেত্রকোণা সদরের শিবগঞ্জ রোডে। স্বাস্থ্যসেবা দিতে এখানে স্বাবলম্বীর মাধ্যমে বিশালাকৃতির একটি হাসপাতালও চালু রয়েছে।

সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বেগম রোকেয়া ওরফে মাস্তরা আপা জানান, সমাজের টেকসই উন্নয়ন আর অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে আমি আজীবন কাজ করে যাব।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security