করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল তার পরিবার। এক এক করে তিনটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। কিন্তু হাসপাতালে আইসিইউয়ের বেড খালি না থাকায় তাকে ভর্তি করা যায়নি। পরে অক্সিজেনের অভাবে গাড়িতেই মৃত্যু হয় ৩৮ বছর বয়সী পিয়ারা বেগম নামের ওই নারীর। শুক্রবার দিবাগত রাতে সিলেট নগরীতে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত পিয়ারা বেগম সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার ইউমানপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম মুজিবুর রহমান বলেন, পিয়ারা বেগম আমার আত্মীয়। গত কয়েকদিন আগে তিনি সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে করোনো উপর্সগ বাড়তে থাকে। গতকাল শুক্রবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে সিলেটের নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেড না পেয়ে পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও একই অবস্থা। পরে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় আল হারামাইন হাসপাতালে। কিন্তু সেই হাসপাতালেও বেড খালি পাওয়া যায়নি। সেখানে থেকে অন্য আরেকটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাড়িতেই মৃত্যুবরণ করেন পিয়ারা।
তিনি আরও জানান, মৃত্যুর পর রোগীকে তার গ্রামের বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ শনিবার বেলা ১১টায় নিজ গ্রামে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শুধু পিয়ারা বেগম নয়, আইসিইউ সংকট থাকায় সিলেটে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ, সিলেটে আইসিইউর তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। এসব রোগীর স্বজনরা একটি আইসিইউ বেডের জন্য আহাজারি করলে কোথাও পান না। আইসিইউতে থাকা কোনো রোগী মারা গেলে কিংবা কেউ সুস্থ হয়ে আইসিইউ ছেড়ে দিলে তবেই ভর্তির সুযোগ থাকে। শূন্য হওয়া আইসিইউ বেডের জন্য আবার বেশ কয়েকজন রোগী অপেক্ষামান থাকেন।
উল্লেখ্য, করোনায় সিলেট বিভাগে মৃতের সংখ্যা এখন ৮৭৩। এর মধ্যে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৫ জনসহ সিলেট জেলায় মারা গেছেন ৭০২ জন। মৃতদের মধ্যে সুনামগঞ্জের ৬০ জন, মৌলভীবাজারের ৬৭ জন ও হবিগঞ্জের ৪৪ জন রয়েছেন।