রবিবার, এপ্রিল ১৪, ২০২৪

যৌতুকের কারণে কীটনাশক পানে গৃহবধূর মৃত্যু

যা যা মিস করেছেন

কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন (স্টাফ রিপোর্টার) : নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপাজেলায় গাছে দেয়ার কীটনাশক পানে রিমা (২১) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গৃহবধূ।

যৌতুকের জন্য তার স্বামী প্রায় সময়ই চাপ দিতো বলে জানান নিহতের বাবা ও বোন। নিহত গৃহবধূ উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের গোদারিয়া গ্রামের মতি মিয়ার (৩০) স্ত্রী এবং এই দম্পত্তির আট মাস বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

জানা যায়, প্রায় ১৮ মাসে আগে বিরিশিরি ইউনিয়নের গাভিনা গ্রামের নজরুল ইসলামে মেয়ে রিমার সাথে বিয়ে হয় গোদারিয়া গ্রামের হফিকুল ইসলামের ছেলে মতি মিয়ার। গত বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিবের পরে রিমা কীটনাশক পান করেন। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।

দুর্গাপুর হাসপাতালের আরএমও (আবাসিক মেডিকেল অফিসার) ডা. তানজিরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বিষপানে রিমা নামে এক রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। আজ (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এখানেই (দুর্গাপুর হাসপাতাল) রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের বোন আসমা জানান, ‘বোনের বিয়েতে বাবা ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ করে ঘরের আসবাবপত্র দিয়েছে। বিয়ের পর বোন জামাই প্রায়ই বলে অন্য জায়গায় বিয়ে করলে দুই-তিন লাখ টাকা পেতাম। আমার বোন নাকি তাদের বাড়িতে বেশি খাওয়া-দাওয়া করে এসব বিষয় নিয়েও প্রায় সময়েই খুঁটা দিত স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ভগ্নিপতি ফোনে জানায় তোমার বোনকে এসে নিয়ে যাও। সন্ধ্যার পর আবার ফোন আসে বোন নাকি বিষপান করছে। ডাক্তার ময়মনসিংহ হাসপাতালে রেফার্ড করলেও বোন জামাই (মতি মিয়া) সেখানে নিয়ে যায়নি।’

রিমার বাবা নজরুল ইসলাম জানান, ‘গরু ও বাছুর কিনে দেয়ার জন্য মেয়েকে চাপ দিয়েছে। পরে আমি বলছি গরু দিতে পারবো না বাছুর কিনে দিবো। গত চার-পাঁচ দিন আগেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে ফোনে জামাই জানায় আপনার মেয়েকে নিয়ে যান। আমি মনে করেছিলাম এরকম কথা প্রায় সময়ই বলে জামাই। বৃহস্পতিবার রাতে আবার ফোনে জানায় রিমা বিষ খাইছে।’

গৃহবধূর স্বামী মতি মিয়া বলেন, সন্ধ্যার আগে বাড়িতে আসলে বউকে ঘরের দরজায় দাঁড়ানো দেখি। সে কোন কথা বলছে না। বলি কি হয়েছে তোর। রান্না করবি না বললে সে না করে। আমার ঘরে থাকতে চাইলে আমি যেভাবে বলব সেভাবে থাকতে হবে এ কথা বলি। থাকতে না চাইলে তোর বাপ-বোনকে খবর-দে। পরে আমি শ্বশুর ও জেওয়াসকে (স্ত্রী বোন) ফোনে জানায়, আপনারা কালকে এসে আপনাদের মেয়ে ও বোনকে নিয়ে যান। একথার বলার পর ছেলেকে টান নিয়ে যায়। পরে গাছে দেয়ার বিষ খেয়েছে রিমা। যৌতুক নিয়ে অত্যাচার করেছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, ‘কোন যৌতুক চাওয়া-টাওয়া নাই এবং এ নিয়ে কোন অত্যাচার করা হয়নি।’

দুর্গাপুর থানার ওসি মো. শাহনুর-এ আলম জানান, গৃহবধূ লাশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security